Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লি উদ্বোধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২১ ১২:৪১

ঢাকা: পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা চুল্লি উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রোববার (১০ অক্টোবর) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন।

এর মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বসল বহুল প্রতীক্ষিত পারমাণবিক চুল্লিপাত্র অর্থাৎ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল। এটাকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের হৃৎপিণ্ড বলা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান উপস্থিত ছিলেন।

রূপপুরের এই পারমাণবিক চুল্লি নির্মিত হয়েছে রাশিয়ায়। ভিভিআর-১২০০ মডেলের এই রিয়্যাক্টরে পরমাণু জ্বালানি পুড়িয়ে মূল শক্তি উৎপাদন হবে এবং ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। রূপপুরের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারবে বলে ধারণা দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্য নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলটি রাশিয়ার ভলগা নদী থেকে ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গত বছরের অক্টোবর দেশে আসে। পরে ভেসেলটি রাশান ফেডারেশনের জাহাজ থেকে বালাদেশের স্থানীয় বিশেষ বার্জে স্থানান্তর করা হয়। মোংলা থেকে নদীপথে নিয়ে আসা হয় পদ্মাপাড়ে রূপপুর নৌ-বন্দরে। সেটি স্থাপনের জন্য দীর্ঘ একবছর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করা হয়। চূড়ান্তভাবে অক্টোবরে বসানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।

প্রজন্মের সর্বাধুনিক ‘ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর’ স্থাপিত হবে। রিঅ্যাক্টরগুলোর কার্যকাল ৬০ বছর, যা প্রয়োজনে আরও ২০ বছর বাড়ানো যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাশিয়া ৯০ শতাংশ দিচ্ছে ঋণ হিসেবে, যা প্রকল্পটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরবর্তী ২৮ বছরে পরিশোধ করা যাবে। প্রকল্প ব্যয়ের অবশিষ্ট ১০ শতাংশ অর্থ জোগান দেবে বাংলাদেশ।

রূপপুরের দুটি ইউনিট থেকে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে। কেন্দ্রটির সব যন্ত্রপাতি তৈরি, সরবরাহ ও নির্মাণে কাজ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটম। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশে দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বলে আশা সরকারের। দেশে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে বর্তমানে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা। অথচ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকায়।

২০১৭ সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দেশটির প্রথম পারমাণবিক কেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের একক বৃহত্তম প্রকল্প এটি এবং কেন্দ্রটির মূল পর্যায়ের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জগতে প্রথম পা রাখবে।

দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা থাকলেও, সফলভাবে শেষ হয়েছে এর প্রথম ধাপের কাজ। রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় পারমানবিক শক্তি করপোরেশন নেতৃত্ব দিচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে।

সারাবাংলা/এনআর/একে

টপ নিউজ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর