প্রত্যেক উপজেলায় মডেল মন্দির চায় পূজা উদযাপন পরিষদ
১০ অক্টোবর ২০২১ ১৯:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় উৎসব পরিহার করে মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতায় দুর্গাপূজা করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলা। দেশের সব উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার (১০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ-চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১ হাজার ৫৫৩টি সার্বজনীন এবং পারিবারিক ৪১১টি মণ্ডপসহ মোট ১ হাজার ৯৬৪টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় দেবীর বোধনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। শুক্রবার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
লিখিত বক্তব্যে সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর বোয়ালখালীর মেধস মুনির আশ্রমে মহালয়া উদযাপনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গত বছরের মতো এবারও উৎসব পরিহার করে মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতায় দুর্গাপূজা করার অনুরোধ করছি। পূজায় ডিজে পরিহার করা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান-বাজনা, মেলা, নাটক, সমাবেশ, আরতি প্রতিযোগিতা ও শোভাযাত্রা পরিহার করা এবং পূজামণ্ডপে আগত সবার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা ও মণ্ডপে প্রবেশমুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান-পানি রাখার অনুরোধ করছি।’
এতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা আয়োজনের জন্য ৪ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় সভা, ৫ অক্টোবর পুলিশ সুপারের সঙ্গে আইনশৃংখলা বিষয়ক সভা এবং ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পর্যায়ের পূজামণ্ডপে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিম রাখা, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ফোন নম্বর দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখা, জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করা, পূজামণ্ডপে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের জন্য খোলামেলা রাখা, পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের সময় মাইক বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা, মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থানের ব্যবস্থা রাখা, আতশবাজি বা পটকা ফুটানো পরিহার করা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রাখা, বিদ্যুতের বিকল্প জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা, বিজয়া দশমী শুক্রবার হওয়ায় জুমার নামাজের পরে সূর্যালোক থাকা অবস্থায় প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন করতে আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন না করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দেশের সব উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে একটি মডেল মন্দির নির্মাণ, বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে চণ্ডীতীর্থ মেধস আশ্রমের সংস্কার ও সড়ক উন্নয়ন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে ফাউন্ডেশনে রূপান্তর করা, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ দিন সরকারি ছুটি, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে আইন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়নে জটিলতা নিরসনের আহ্বান জানানো হয়েছে সরকারের কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব, নারায়ণ চৌধুরী, বিপুল দত্ত, বিজয় কৃষ্ণ বৈষ্ণব, বিশ্বজিৎ পালিত, উত্তম শর্মা, কল্লোল সেন, সাগর মিত্র, রিমন মুহুরী, সুভাষ চৌধুরী, দোলন মজুমদার, রাজীব শীল, কাজল শীল, শিপুল দে ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও