এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হচ্ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন
৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৫:৩৪
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী এক মাসের মধ্যেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন-২০১৮ চূড়ান্ত করা হবে। এই আইনটি হলে রোগী ও চিকিৎসক উভয়েরই নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে আইনটির মাধ্যমে সকল ধরণের অপচিকিৎসাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন।
আগামী ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০১৮’ উদযাপন করা হবে। এবার দিনটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা : সবার জন্য সর্বত্র’।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করছি। এই আইনের খসড়া আরেকটু পর্যালোচনা করে মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে। আশা করছি এক মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো। তিনি বলেন, সুস্থ জাতিই সুন্দর দেশ গঠন করতে পারে।’
সরকার বর্তমানে জিডিপির দুই দশমিক ৮ শতাংশই স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ। যা আগে ছিল ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ। শিশু টিকাদানের অর্জন ৯৪ শতাংশ। ৬৫ শতাংশ মানুষকে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার এখন প্রতি লাখে ১৭৬ জন। প্রতি হাজারে ২৩ দশমিক তিন শতাংশ। যা আগে ছিল ৪২ শতাংশের বেশি।’
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভে (বিডিএইচএস) এ মাতৃমৃত্যুর হারের পরিসংখ্যান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘তাদের পরিসংখ্যানের সঙ্গে আমরা একমত নই। কারণ মাতৃমুত্যুর হার আগের চেয়ে অনেক কমেছে। শুধু তাই নয়, মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে আমরা এখন সিজার বিষয়েও কঠোর হয়েছি। এখন থেকে প্রতিটি সিজারিয়ান অপারেশন করার বিষয়ে আমাদের জানাতে হবে। আমরা যাচাই করে দেখবো সিজার করা জরুরি ছিল কি-না। এ জন্য সকল তথ্য নির্দিষ্ট একটি ফরমে লিপিবদ্ধ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সকল গোষ্ঠির কাছে পৌঁছেছি। আমরা চরাঞ্চলে, পাহাড়ে এবং রিমোট এলাকাতেও স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি। এখন সারাদেশে ৬টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নিমার্ণাধীন রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে বার্ন ও প্লাস্টিক ইনিস্টিটিউট খুলে দেওয়া হবে। ডাইজেস্ট ইনিস্টিটিউটও করা হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কার্ডিয়াক ইউনিট খোলা হচ্ছে। সিলেটে মেডিকেল ইউনিভার্সিটি করা হচ্ছে। মেন্টাল ও ট্রমা হেলথ সেন্টারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা আগামী মাসে ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেব। এ ছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৪০ হাজার কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে।’
আগামী শনিবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এদিন সেমিনার, জাতীয় পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, স্মরণিকা প্রকাশ, টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠান, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও জারী গানসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এইচএ/এমআই