তিন বছর ধরে ফ্রিজে মায়ের লাশ, ছেলে আটক
৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:০৩ | আপডেট: ৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:০৯
।। কলকাতা থেকে।।
তিন বছর আগে মারা যাওয়া এক নারী সরকারি কর্মকর্তার লাশ মমি করে ফ্রিজে রেখেছিলেন তারই ছেলে। বুধবার (৪ এপ্রিল) রাতে কলকাতার বেহালা থানার ঘোলসাপুরের জেমস লং সরণিতে ওই নারী কর্মকর্তার বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে সন্তান শুভব্রত মজুমদারকে।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে শুভব্রতের মা বীণা মজুমদার কলকাতার একটি হাসপাতালে মারা যান। এরপর তার মৃতদেহ পিস হ্যাভেনে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। কিন্তু তখন থেকেই বীণা মজুমদারের লাশ জেমস লং সরণির ওই বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিলো।
পুলিশ জানিয়েছেন, বীণা মজুমদারের মৃতদেহ এভাবে সংরক্ষণের বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন ছিলো। পাড়া-প্রতিবেশী কেউ বিষয়টি জানতেন না, এমনকি আত্মীয়-স্বজনরা বেড়াতে এলেও তাদেরকে লাশ সংরক্ষণ করা রুমে যেতে দেওয়া হতো না। মৃতদেহটির নাড়িভুড়ি বের করে ফর্ম্যাল্ডিহাইড মাখিয়ে ফ্রিজের মধ্যে রাখা হয়েছিলো।
ফ্রিজ থেকে লাশ উদ্ধারের সময় বীণা মজুমদারের ডেথ সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে বীণা মজুমদারের স্বামী ৮৯ বছর বয়সী গোপাল মজুমদার ও তার ছেলে শুভব্রত মজুমদার কেউই তা দেখাতে পারেননি।
ওই এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানাগেছে, বীণা মজুমদারের ছেলে শুভব্রতের বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। ছাত্র জীবনে তিনি বেশ মেধাবী ছিলেন। তার পড়াশোনার বিষয় ছিলো লেদার টেকনোলজি। একটা সময় কলকাতার কাছেই বানতলা চর্ম নগরীর একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন কিন্তু পরবর্তীতে সেই চাকরি ছেড়ে দেন। তারপর থেকে বিশেষ কিছু করতেন না।
ফ্রিজের মধ্যে লাশ সংরক্ষণ করে রাখার বিষয়টি শুভব্রতের বাবা গোপাল মজুমদারও জানতেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ। তবে তাকে আটক করা হয়নি, জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুভব্রত পুলিশকে জানিয়েছে তিনি বিশ্বাস করতেন একদিন বিজ্ঞানের এমন উন্নতি ঘটবে যে মৃতদেহে প্রাণ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। সেই বিশ্বাস থেকেই মায়ের দেহকে মমি করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছিলেন তিনি।
মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট গোপন করে লিভিং সার্টিফিকেট জোগাড় করে মাসে পঞ্চাশ হাজার রুপি পেনশনের টাকা উত্তোলন করতেন শুভব্রত। এই বিষয়টি উল্লেখ করে পুলিশ জানান, ‘এই ঘটনার সঙ্গে অর্থের বিষয়টিও জড়িত থাকতে পারে।’
সারাবাংলা/এমআইএস/এমআই