ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির দায়-দেনা নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের লক্ষ্যে চার সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে দেবেন হাইকোর্ট। ইভ্যালির বিষয়ে দুপক্ষের শুনানি শেষে বুধবার (১৩ অক্টোবর) আদেশের জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ইভ্যালির সব নথি হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব নথি দাখিল করেছেন জয়েন্ট স্টক এক্সচেঞ্জ কোম্পানির রেজিস্ট্রার। এ বিষয়ে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১৩ অক্টোবর) আদেশ দেবেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের (আরজেএসসি) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
এ বিষয়ে আইনজীবী তাপস কান্তি বল সারাবাংলাকে বলেন, আদালত বলেছেন- ইভ্যালি অবসানের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। ওই কমিটিতে একজন সাবেক বিচারপতি, একজন সাবেক সচিব, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং একজন আইনজীবী থাকবেন। এই কমিটির ইভ্যালি অবসায়নের আগে এর দায়-দেনা নির্ধারণ করবে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আমরা আদালতকে বলেছি সরকার ইভ্যালিসহ সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সচেতন রয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে বাদী ইভ্যালির বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে না গিয়ে সরাসরি আদালতে এসেছেন। যা আইনের ব্যত্যয়। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মেনে নেবে সরকার।
এর আগে এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না; তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এজন্য একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিবাদীদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় নথি তলবের আদেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন।
এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু অর্ডার দেওয়ার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পণ্যটি তাকে হস্তান্তর করেনি ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু টাকা রিফান্ড বা পণ্য কোনোটিই এখন পর্যন্ত দেয়নি। অবশেষে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।
গ্রাহকের ওই আবেদনে ইভ্যালির অবসায়ন চাওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ফরহাদ হোসেনের আবেদনটি আদালত অ্যাডমিট করে আদেশ দেন। আদেশে আদালত বলেছেন, ইভ্যালির যত সম্পদ আছে সেটা যেন বিক্রি অথবা ট্রান্সফার (হস্তান্তর) না করা হয়। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এ ব্যাপারে আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেছেন। বিবাদীদের আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
এতে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।