ইভ্যালি: ৩ সচিবের নাম হাইকোর্টে, আদেশের দিন পেছালো
১৩ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৩১
ঢাকা: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির দুই কর্ণধার কারাবন্দি থাকার প্রেক্ষাপটে নতুন একটি কমিটি গঠনের জন্য সাবেক তিন সচিবের নাম হাইকোর্টে জমা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে আদালত কমিটিতে বর্তমান সচিবদেরও নাম রাখার কথা বলে পরে আদেশের জন্য রাখেন।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চে এ তিন সাবেক সচিবের নাম দাখিল করা হয়েছে।
হাইকোর্টে যে তিন সচিবের নাম দাখিল করা হয়েছে- তারা হলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. রেজাউল আহসান, ভূমি সংস্কার বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী।
হাইকোর্ট এই তিন জনের মধ্যে একজনের নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ইভ্যালির দায়-দেনা নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নের লক্ষ্যে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দেবেন বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই কমিটিতে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও একজন আইনজীবীর সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাছুম ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের (আরজেএসসি) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
এ বিষয়ে আইনজীবী তাপস কান্তি বল সারাবাংলাকে বলেছিলেন, ‘ইভ্যালির জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। ওই কমিটিতে একজন সাবেক বিচারপতি, একজন সাবেক সচিব, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং একজন আইনজীবী থাকবেন। এই কমিটির ইভ্যালি অবসানের আগে এর দায়-দেনা নির্ধারণ করবে।’
এর আগে, এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এজন্য একটি নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিবাদীদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় নথি তলবের আদেশ দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানিয়েছিলেন, আবেদনকারী ইভ্যালি অনলাইন শপিংমলে মে মাসে একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি মোবাইল ফোন ভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করেছেন।
এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনার রশিদও দিয়েছেন। কিন্তু অর্ডার দেওয়ার পর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পণ্যটি তাকে হস্তান্তর করেনি ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা পণ্য দেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু টাকা রিফান্ড বা পণ্য কোনোটিই এখন পর্যন্ত দেয়নি। অবশেষে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। গ্রাহকের ওই আবেদনে ইভ্যালির অবসায়ন চাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ফরহাদ হোসেনের আবেদনটি আদালত অ্যাডমিট করে আদেশ দেন। আদেশে আদালত বলেছেন, ইভ্যালির যত সম্পদ আছে সেটা যেন বিক্রি অথবা ট্রান্সফার (হস্তান্তর) না করা হয়। একইসঙ্গে ইভ্যালিকে কেন অবসায়ন করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এ ব্যাপারে আদালত একটি নোটিশ ইস্যু করেছেন। বিবাদীদের আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।’
এতে ইভ্যালি লিমিটেড, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের (আরজেএসসি), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম