Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছোট পরিবারে ১৫ পণ্যেই খরচ বেড়েছে ১১০০ টাকা!

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ অক্টোবর ২০২১ ১০:১৫

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: চার সদস্যের একটি পরিবারে নিত্যপ্রয়োজনীয় মাত্র ১৫টি পণ্যের পেছনেই এক মাসের ব্যবধানে খরচ বেড়েছে অন্তত ১১০০ টাকা। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই ১৫টি পণ্য কিনতে যেখানে খরচ ছিল ৭ হাজার ২৯১ টাকা, সেখানে ঠিক এক মাস পর একই পণ্যের জন্য খরচ বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ৩৯৪ টাকা। সে হিসাবে খরচ বেড়েছে ১৫ শতাংশেরও বেশি।

সরকারি হিসাব তথা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী এই ১৫টির মধ্যে ১০টি পণ্যে ছোট একটি পরিবারে এক মাসে খরচ বেড়েছে ৩৭২ টাকা। তবে খুচরা বাজারের তথ্য বলছে, এই ১০টি পণ্যের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৯৭০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, সরকারি তথ্য আরও বলছে— দেশে এক মাসের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ দাম বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের। এছাড়া দেশি পেঁয়াজের দাম ৫৩ শতাংশ, দেশি আদার দাম ৪৮ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এর বাইরে টিস্যু থেকে শুরু করে সাবান, ডিটারজেন্ট ও বিস্কুটের দামও বেড়েছে। বিপরীতে হাতেগোনা দুয়েকটি পণ্যের দাম স্থির রয়েছে কিংবা কমেছে, যা ক্রেতাদের স্বস্তি দিতে পারছে না। কোনো কোনো পণ্যের দাম মাসের ব্যবধানে দেড় গুণ পেরিয়ে যাওয়ায় বাজার করতে গিয়ে ক্রেতাদের পকেটের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় হয়ে পড়ছে।

১৫ পণ্যেই বাড়তি হাজার টাকা

চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, আলু, ডিম, রুই মাছ, মুরগির মাংস, পেঁয়াজ, শাক, সবজি, কাঁচামরিচ, সাবান ও ডিটারজেন্ট— সব পরিবারের জন্য একেবারেই নিত্যপ্রয়োজনীয় এই ১৫টি পণ্যের দাম এক মাসে কতটা বেড়েছে, সেটি বোঝার চেষ্টা করেছে সারাবাংলা। স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান— চার সদস্যের এরকম একটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয় সারাবাংলার পক্ষ থেকে। এক মাসে এই পণ্যগুলো কী পরিমাণে তাদের প্রয়োজন হয়, জানা হয় সেটিও।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর নাখালপাড়ার অধিবাসী সেই পরিবারের কর্ত্রী সানজিদা সুলতানা জানান, গত মাসের ঠিক আজকের দিনে, অর্থাৎ ১৩ সেপ্টেম্বর এই পণ্যগুলো কিনতে তাদের খরচ হয়েছে ৭ হাজার ২৯১ টাকা। ১৩ অক্টোবরের বাজারদর বলছে, এই পণ্যগুলো কিনতে এখন তাদের খরচ করতে হবে ৮ হাজার ৩৯৪ টাকা। অর্থাৎ ঠিক এক মাসের মাথায় এই ১৫টি পণ্য কিনতেই তাদের খরচ বেড়ে গেছে ১ হাজার ১০৩ টাকা, যা ১৫ শতাংশের বেশি।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সানজিদা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, এই হিসাবের মধ্যেও মসলা, বিস্কুট, টিস্যু, নাস্তার উপকরণসহ সন্তানদের শিক্ষা উপকরণের কছুই নেই। এসব পণ্যের দাম তো আরও বেশি বেড়েছে। আবার শুধু রুই মাছে তো মাস চলে না, অন্য মাছও কিনতে হয়। সেগুলোর দামও বাড়তি। সবজিও একেবারে না হলেই নয়, এই হিসাবে কেবল সেগুলো রাখা হয়েছে। গাজর-টমেটোর মতো সবজিগুলো নিজেদের জন্য না হলেও সন্তানদের জন্য কিনতে হয়। সেগুলোর দাম আকাশছোঁয়া। সবকিছু মিলিয়ে বাজার খরচের বাড়তি দর ভীষণ অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করছে।

মুদি দোকানের চালচিত্র

বর্তমানে খুচরা বাজারে চালের মধ্যে মিনিকেট ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা ও স্বর্ণা চাল ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত মাসের এই সময়ে মিনিকেট ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা ও স্বর্ণা চাল বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকা কেজিতে। এক মাসের ব্যবাধানে মিনিকেট ও স্বর্ণা চালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে। তবে অপরিবর্তি আছে নাজিরশাইলের দাম।

সয়াবিন তেল এক মাস আগে ১৪৫ টাকা লিটারে কেনা গেলেও ভোক্তাকে এখন আরও ৫ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। ২ কেজির আটার প্যাকেট এখন ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। ২০ থেকে ২৫ টাকা হয়ে যাওয়ায় কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে আলুর দামও। আর এক মাস আগে ডিমের হালি ৩০ থেকে ৩২ টাকায় কেনা গেলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৩৮ টাকায়। মাস ব্যবধানে ডিমের হালিতেও দাম বেড়েছে ৬ টাকা।

এদিকে, বাজারে দেশি পেঁয়াজ এখন ৭০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে এই দাম ছিল যথাক্রমে ৪৫ টাকা ৩৮ টাকা। মাসের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ২৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ২৭ টাকা বেড়েছে। তবে দোকানিদের তথ্য অনুযায়ী, স্থির আছে ডাল ও চিনির দাম। এখন দেশি ডাল ১১০ টাকা, ভারতীয় ৯০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি প্রতি কেজি ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবি’র হিসাবে নিত্যপণ্যের দাম

টিসিবি’র হিসাবে নিত্যপণ্যের দাম

বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে মহাখালীর বউবাজারের ভাই ভাই স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুর রহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পেঁয়াজ, রসুন, আদা, তেল ও আলুসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। টিস্যু ও বিস্কুট থেকে শুরু করে সাবান ও ডিটারজেন্টের দামও বাড়তি। মাঝারি আকারের লাক্স সাবানের দাম ছিল ৩৬ টাকা, এখন ৪০ টাকা। ৩২ টাকার লাইফবয় এখন ৪৬ টাকা। ৪০ টাকার ডেটল সাবান ৪২ টাকা, ২০ টাকার হুইল সাবান হয়েছে ২২ টাকা।’

এই দোকানির তথ্য অনুযায়ী, সব ধরনের সাবানের দামই ২ থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া ডিটারজেন্টের মধ্যে এক মাস আগে আধা কেজির হুইল পাউডার ৪২ টাকায় বিক্র হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। আর এক কেজির প্যাকেট ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। বসুন্ধরা টিস্যুর ১৫ টাকার প্যাকেটের দাম এখন ২০ টাকা, ৫৫ টাকার টিস্যুর দাম ৭০ টাকা। আর ৭০ টাকার টিস্যুর দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। কোম্পানি প্রকারভেদে বিস্কুটের দাম প্যাকেটে বেড়েছে ৪ টাকা করে।

মাছ-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, চড়া মাংসের বাজার

দোকানিরা যে তথ্য দিচ্ছেন, তাতে বাজারে মাছ ও শাক-সবজির দামে মাসখানেকের ব্যবধানে খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। বরং গত মাসের তুলনায় এ মাসে মাছের দাম কিছুটা কমেছে বলেই দাবি করলেন বউবাজারের মাছ বিক্রেতা হাবিব। তিনি বলেন, প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কমেছে। ৩ কেজির রুই মাছ ৩৫০ টাকা কেজি, দেড় ও ২ কেজির মাছ ২৮০ টাকা এবং ১ কেজির মাছ ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে মাছের দাম আরও বেশি ছিল। মাস ব্যবধানে মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।

মাসের ব্যবধানে সবজির দামও অনেকটাই অপরিবর্তিত বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, শীত আসতে থাকায় শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমতির দিকে। বাজারে শিম ১০০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেড়স ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা ও শশা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাসে আগে শিম ১৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা ও শশা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল। তবে একই সময়ে এসে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচামরিচের দাম— ৮০ টাকা থেকে সেটি পৌঁছে গেছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। এই সময়ে অবশ্য সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গাজরের দাম। দেশি গাজর এক মাসের ব্যবধানে ৬০/৭০ টাকা থেকে ১০০/১২০ টাকায় পৌঁছে গেছে। আর চায়না গাজরের দাম ১০০/১২০ টাকা থেকে পেরিয়ে গেছে ২০০ টাকা।

মাছ-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও মাংসের বাজার, বিশেষ করে মুরগির মাংসের দাম গত এক মাসে বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। শরিয়তপুর ব্রয়লার হাউজ নামের একটি মুরগির দোকানের মালিক জুম্মান মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, পোল্ট্রি মুরগি এখন ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস নয়, ১০ দিন আগেও দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। আর এক মাস আগে তো ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি।

জুম্মান মিয়ার দেওয়া তথ্য বলছে, কর্ক জাতের মুরগির দাম মাসের ব্যবধানে ২২০ টাকা থেকে পৌঁছে গেছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায়। আর দেশি মুরগি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এখন, যা এক মাস আগে ছিল ৩৮০ টাকা। তবে গরুর মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে।

সরকারি হিসাবে দাম বেড়েছে অল্প

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যও বলছে এক মাসের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে সরু চাল (নাজির বা মিনিকেট) ৫৮ থেকে ৬৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যার দাম এক মাস আগে ছিল ৫৫ থেকে ৬৬ টাকা। মাঝারি আকৃতির চাল (পাইজাম বা লতা) ৫০ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আর মোটা চাল (স্বর্ণা বা চায়না) এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজিতে। এই চালের দাম এখনো একই রয়েছে বলে জানাচ্ছে টিসিবি।

সরকারি সংস্থাটির তথ্য বলছে, খোলা আটার দাম ৩২/৩৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা। আর প্যাকেটজাত আটার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় স্থির রয়েছে। তবে মাসখানেক আগের ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা ছিল যে খোলা সয়াবিন তেলের দাম, তা এখন হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা লিটারে, যার তাম এক মাস আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা।

টিসিবি বলছে, মসুর ডাল (বড় দানা) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে। এক মাস আগে এর দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। অন্যদিকে মাঝারি দানার মসুর ডাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৮ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে, যা এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। ছোট দানার মসুর ডাল অবশ্য আগের মতোই ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবির তথ্যেও দেশি পেঁয়াজের প্রতি কেজির দাম ৪৩ থেকে ৪৫ টাকার জায়গায় বেড়ে হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। এ ক্ষেত্রে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ছিল মাসখানেক আগে, যা এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। এছাড়া দেশি রসুনের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা, আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা, দেশি আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা এবং আমদানি করা আদার দাম কেজিতে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গত এক মাসে।

সরকারি তথ্যে মাছের বাজার প্রায় অপরিবর্তিত। একইরকম অপরিবর্তিত খাসির মাংসের দামও। তবে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। আর বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। এ ক্ষেত্রে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকার জায়গায় বেড়ে হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা। আর দেশি মুরগির প্রতি কেজির দাম ৪২০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি থেকে পৌঁছে গেছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।

সরকারি হিসাবের সঙ্গে মিলছে না বাজারের চিত্র

সানজিদা সুলতানার পরিবার যে ১৫টি পণ্যের হিসাব দিয়েছে, এর মধ্যে ১০টি পণ্যের দাম পাওয়া যায় টিসিবি’র ওয়েবসাইটে। সেই হিসাব বলছে, তার পরিবারে এক মাসের জন্য প্রয়োজনীয় এই পণ্যগুলো কিনতে সেপ্টেম্বর মাসে খরচ হতো ৬ হাজার ৯০৫ টাকা। এই পণ্যগুলোই অক্টোবরে কিনতে খরচ হবে ৭ হাজার ২৭৭ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৩৭২ টাকা বা ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়েছে খরচ।

তবে সরকারি এই হিসাবের সঙ্গে মিলছে না বাজারের চিত্র। কেননা সানজিদার হিসাব অনুযায়ী গত ১৩ সেপ্টেম্বর এই ১০টি পণ্যের জন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে ৬ হাজার ১৭৫ টাকা। অন্যদিকে আজ ১৩ অক্টোবরের বাজারদর অনুযায়ী এই পণ্যগুলোর খরচ ৭ হাজার ১৪৩ টাকা। সে হিসাবে খরচ বেড়েছে ৯৬৮ টাকা, ১৫ শতাংশের কিছু বেশি।

বাজার স্থিতিশীল রাখার দাবি, মন্ত্রী বলছেন মনিটরিং জোরদার হয়েছে

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান সারাবাংলাকে বলেন, কোনো একটি পরিবারের জন্য মাত্র ১৫টি পণ্যে এক মাসের ব্যবধানে বাজার খরচ ১ হাজার টাকা বেড়ে যাওয়া মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটি একটি অস্বস্তির একটি বিষয়।

তিনি বলেন, এবার বাজার পরিস্থিতি খুবই নাজুক। প্রতিবারই সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে অনেক পণ্যের দাম বাড়ে। কিন্তু এবার আমদানি-নির্ভর সব পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এটি মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে সংকট তৈরি করেছে। দ্রব্যমূল্যের বাজার যেন স্থিতিশীল থাকে, সরকার সেদিকে আরও বেশি নজর দেবে বলে আমরা আশা করি।

জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিসিবি ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কাজ করছে। তারা মনিটরিং জোরদার করছে। আশা করি শিগগিরই বাজারে তার প্রতিফলন ঘটবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। নানা কারণে আমদানি না হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর ভারতেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। আশা করি পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকায় নেমে আসবে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর