লালন শাহের তিরোধান দিবসে বসেছে সাধুসঙ্গ
১৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৭
কুষ্টিয়া: আজ পয়লা কার্তিক। ফকির লালন শাহের ১৩১তম তিরোধান দিবস। ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর (১ কার্তিক) ফকির লালন শাহ দেহত্যাগ করেন। গত বছরের মতো এবারও করোনা মহামারির কারণে মেলা হচ্ছে না লালন আখড়া বাড়ি এলাকায়।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে মেলা স্থগিত ঘোষণা করেছেন। তবে সাধুসঙ্গ হচ্ছে লালন মাজার এলাকায়। বাউলদের বাড়িতে ও বিভিন্ন সংস্থার ব্যানারে সাধুসঙ্গে অংশ নিয়েছেন বাউলরা।
ফকির লালন শাহের তিরোধানের পরের বছর থেকে সাধুসঙ্গ হয়ে আসছে। বাউল মতালম্বী সাধকরা লালন শাহের তিরোধানের পরের বছর থেকে তিরোধান দিবস উপলক্ষে সাধুসঙ্গ করে আসছেন। আর ফকির লালন শাহ জীবিত থাকাকালীন সময়ে দোলপূর্ণিমার তীথিতে সাধুসঙ্গ করতেন। বাউল মতালম্বীদের সাধুসঙ্গ তাদের মতবাদের একটি অংশ। তারা সাধুসঙ্গে মিলিত হয়ে মনের ভাবের আদান-প্রদান করেন।
লালন মাজারে অবস্থান করা বাউল আব্দুস সালাম বলেন, ‘আত্মা শুদ্ধির চর্চায় হলো বাউল মতের চর্চা। আর সাধুসঙ্গে সাধুগুরুর সংস্পর্শে এসে এই চর্চার জ্ঞান লাভ করে বাউলরা। মেলা লালন একাডেমি করে থাকে। এটি তাদের আর্থিক বিষয়। এর সঙ্গে বাউলদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
বাউল বলাই শাহ বলেন, ‘আত্মার পরিশুদ্ধি খোদাপ্রাপ্তির উপায়। বাউলদের এই বিশ্বাস থেকে বাউল ফকিররা লালন মাজারে আসেন। আত্মার পরিশুদ্ধির জন্যই সাধুসঙ্গ। শত বছর ধরে সাধুসঙ্গ হয়ে আসছে। আগামীতেও হবে।’
ছেউড়িয়া এলাকায় অবস্থিত সদর আশ্রমের সভাপতি ডা. সামসুল আলম বলেন, ‘মেলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আহলে বায়াতের সদস্যরা আশ্রমে সাধুসঙ্গ উপলক্ষে আসেন এবং সাধুসঙ্গ করে চলে যান।’
ভাবনগর শিল্প ও সাহিত্য চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি হবিবর রহমান বিশু বলেন, ‘তিরোধান দিবসে সাধুসঙ্গে বাউল সাধকরা আসেন। আমরা শুধু তাদের সেবাদানের (থাকা-খাওয়া-গোসল) ব্যবস্থা করি। সাধুসঙ্গ শেষে বাউলরা ফিরে যান।’
লালন একাডেমির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক বলেন, ‘মেলা করলে লাখো মানুষের সমাগম হয়। ফলে করোনা বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। এই কারণে করোনা প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর থেকে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও