‘ঢাকামুখী অভিবাসন ঠেকানো না গেলে, কোনো পরিকল্পনা কার্যকর হবে না’
১৬ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৪৪
ঢাকা: রাজধানীমুখী অভিবাসন ঠেকাতে না পারলে যত পরিকল্পনাই নেওয়া হোক না কেন তা কার্যকর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ওয়াটার এইড বাংলাদেশের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) সেক্টরে ৫০ বছরের অর্জন ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে মেয়র তাপস এ মন্তব্য করেন।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা আজ দুই কোটি ১০ লাখ মানুষের শহর। ২০৩০ সালে কি এটা তিন কোটি হবে? ২০৪১ সালে কি পাঁচ কোটি হবে? তাহলে কিন্তু, সমস্যার সমাধান হবে না। আগে দুই কোটি ১০ লাখ মানুষের নাগরিক সুবিধা-উন্নত ঢাকার সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য দেশের গ্রামগুলোতে কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, যখন ঢাকার দিকে এই গতি (গ্রাম হতে শহরে অভিবাসন) রোধ করা যাবে, তখনই মানুষের যথার্থ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কিন্তু ঢাকায় এই অভিবাসনের গতি চলতে থাকলে, যতই পরিকল্পনা করা হোক না কেন, কিছুই কার্যকর হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া রূপরেখার আলোকেই কেবল ঢাকামুখী অভিবাসন রোধ করা যাবে উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম হবে শহর পথনকশা সঠিকভাবে, সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারলে, অভিবাসনের এই গতি রোধ করে ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকাবাসীর জন্য উন্নত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যাবে।’
ঢাকা শহরের ৯৫ শতাংশ বাড়িতে সেপটিক ট্যাংক এবং ৯৯.৯৯ শতাংশ বাড়িতে সোক ওয়েল নেই। বাড়ির মালিকদের সেগুলো নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে বাধ্য করতে হবে জানিয়ে তাপস বলেন, স্থানীয় সরকার আইন অনুসারে ইমারত নির্মাণ-পুনঃনির্মাণের অনুমতি সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে নিতে হবে। কিন্তু, সেই অনুমোদন রাজউক দিয়ে থাকে। একটি নীতিমালা মন্ত্রণালয়ে পর্যালোচনা চলছে। তিনি আশাবাদী যে, ডিসেম্বরের মধ্যে সেটা পেয়ে গেলে ২০২২ সাল থেকে সিটি করপোরেশন যথাযথ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বসতবাড়ি, আবাসনগুলো নিজস্ব সেপটিক ট্যাংক ও সোক ওয়েল স্থাপন বা নির্মাণ করবে না, সেগুলো অনুমতি পাবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনসহ জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জাতির দুঃসময়ে, দুর্দিনে, বিপদে-আপদে সবার আগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। দেশে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে মিশে বসবাস করে। এ দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত। সেই সম্প্রীতি নষ্ট করতে এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারসহ সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে হবে।
সম্প্রতি কুমিল্লার পূজামণ্ডপে সৃষ্ট ঘটনাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম