হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের গোপন পরীক্ষা চালিয়েছে চীন
১৭ অক্টোবর ২০২১ ১১:১৬
মহাকাশে আঘাত হানতে সক্ষম এমন একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে চীন। তবে পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষার বিষয়টি গোপন রেখেছিল বেইজিং। গতকাল শনিবার (১৬ অক্টোবর) ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এমন খবর প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এই পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্টে বেইজিং একটি ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে যা তার লক্ষ্যবস্তুর দিকে নামার আগে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করে। তবে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যমাত্রার ৩২ কিলোমিটার আগেই ভূপাতিত হয় বলে জানিয়েছেন তিন সূত্র।
সূত্র আরও জানায়, হাইপারসনিকটি একটি লং মার্চ রকেটে বহন করা হয়েছিল। মূলত কোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার আগে ঘোষণা দিয়ে জানানো হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা গোপন রাখা হয়েছিল।
হাইপারসনিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে চীনের এই অগ্রগতি ‘মার্কিন গোয়েন্দাদের অবাক করে দিয়েছিল’ বলে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
চীনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ আরও অন্তত পাঁচটি দেশ হাইপারসনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ঐতিহ্যবাহী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতোই, যা পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতি সম্পন্ন।
কিন্তু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো একটি চাপের মধ্যে মহাকাশ দিয়ে উড়ে গিয়ে তাদের লক্ষ্যে আঘাত হানে। আর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বায়ুমণ্ডলে নিম্নস্তর দিয়ে উড়ে গিয়ে আরও দ্রুত গতিতে তার লক্ষ্য বস্তুওত আঘাত হানতে সক্ষম।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো- হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সহজে হস্তান্তরযোগ্য (অনেক ধীর, প্রায়শই সাবসোনিক ক্রুজ মিসাইলের মতো)। এ কারণে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি শনাক্ত করা এবং প্রতিরোধ করা কঠিন কাজ।
যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। তবে তা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত এবং প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের (সিআরএস) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন আগ্রাসীভাবে তার প্রযুক্তির উন্নয়ন করছে। যা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের হাইপারসনিক এবং অন্যান্য প্রযুক্তিকে মোকাবিলার জন্য তৈরি করা হচ্ছে।
এই প্রতিবেদন এমন এক সময় প্রকাশ করা হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা চমর আকার ধারণ করেছে। একইসঙ্গে তাইওয়ানের কাছে সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে চীন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
সারাবাংলা/এনএস