Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্দিরে হামলার সময় ‘নীরব’ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশজুড়ে মঠ-মন্দির, পূজামণ্ডপ ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সমাবেশ থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হামলাকারীদের বিচার এবং সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের দায়িত্বশীল যেসব কর্মকর্তা হামলার সময় নীরবতা পালন করেছেন, তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ইসকন, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ হচ্ছে না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হয়নি। সর্বশেষ হিন্দু সম্প্রদায়ের মঠমন্দির-বাড়িঘরে যারা হামলা চালিয়েছে, যারা সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে, তাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মঠমন্দির সরকারি অর্থায়নে পুনঃনির্মাণ করতে হবে। হামলার সময় প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা নীরবতা পালন করেছেন। তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।’

রাজনৈতিক সংকীর্ণতার ঊর্দ্ধে উঠে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য গঠন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়তে হবে। আর এই দায়িত্ব নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনাকে। একইসঙ্গে দেশের সকল প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মীকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর কাছে শুধু হিন্দু নয়, কোনো মানুষই নিরাপদ নয়।’

ইসকনের সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী ও বিপ্লব পার্থের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার, ইসকন প্রবর্তকের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌরদাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, বাংলাদেশ গীতাশিক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা তপন কান্তি দাশ, পিয়াল শর্মা, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের সভাপতি স্বরূপ পাল।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশের পর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়া একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর আন্দরকিল্লায় গিয়ে শেষ হয়।

পূজা উদযাপন পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
এদিকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের কঠোর শাস্তিসহ ছয় দফা দাবিতে চারদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিষদের সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।

কর্মসূচির মধ্যে আছে- ১৮ অক্টোবর বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন। ১৯ অক্টোবর সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেএম সেন হলে প্রতীকী অনশন। ২১ অক্টোবর বিকেল ৩টায় জেএম সেন হলে সমাবেশ। ২২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় জেএম সেন হলে মোমবাতি প্রজ্বলন।

ছয় দফা দাবির মধ্যে আছে- ১৯৭২ সালের সংবিধানের আলোকে সম্প্রদায়ের সমঅধিকার নিশ্চিত করা, সাম্প্রদায়িক হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার করা, ক্ষতিগ্রস্ত মঠ-মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি সরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্মাণ করা, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করা, হামলা য়ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহকারি অনুদান দেওয়া এবং রাজনীতি ও নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার সেন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অরবিন্দ পাল অরুণ, চন্দন তালুকদার, সহ-সভাপতি অর্পন কান্তি ব্যানার্জী, সুমন দেবনাথ, রত্নাকর দাশ টুনু।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

প্রত্যাহার দাবি মন্দিরে হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর