‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্র্যাকের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় সরকার’
১৭ অক্টোবর ২০২১ ১৯:২১
সরকার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর (বিএনএফই) মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে ব্র্যাক দীর্ঘদিন থেকে যে কাজ করছে, তা বেশ ইতিবাচক, প্রশংসনীয় ও বাস্তবসম্মত। ব্র্যাকের সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় সরকার।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে উখিয়ার ১৫ ও ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারের এক হোটেলে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ব্র্যাক থেকে রোববার (১৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. রিপন কবীর লস্কর, ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান, একই কর্মসূচির চিফ অব পার্টি মো. মাহমুদ হাছান, ব্র্যাকের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির (এইচসিএমপি) অধীন শিক্ষা খাতের লিড খান মোহাম্মদ ফেরদৌস ও অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তারা।
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্র্যাকের মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ব্র্যাকের যে ব্যাপক কার্যক্রম আছে, তা বিস্ময়কর। সংস্থাটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩-১৪ বছর বয়সী ৬৯ হাজার ৪২৩ জন ছেলে-মেয়েকে এর আওতায় এনেছে। পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটিতে ৩ হাজার ৭৫৯টি শিশুদের মধ্যেও সংস্থাটি কাজ করছে। এটি সত্যিই অভাবনীয়। ব্র্যাকের এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইচ্ছা করলে সরকার ও ব্র্যাক যৌথ উদ্যোগে নতুন কিছু করতে পারে।
এর আগে, আতাউর রহমান শনিবার সকালে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ের ১৫ ও ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত শিশুদের পাঠশালা হিসেবে বিবেচিত ‘ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার’ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি লেভেল ১ থেকে লেভেল ৪-এ অধ্যয়নরত রোহিঙ্গা শিশু, তাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও পিতা-মাতার সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান। একইসঙ্গে তিনি এ ধরনের শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
আতাউর রহমান বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সঙ্গে ব্র্যাকের সম্পর্ক ১৯৮৫ সাল থেকে। দীর্ঘ সম্পর্কের কারণে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার ব্র্যাকের পাশে থাকবে। এ ক্ষেত্রে যত ধরনের সহযোগিতা দেওয়া দরকার, সরকারের পক্ষ থেকে তা দেওয়া হবে। ব্র্যাকও সরকারের সহযোগী হিসেবে পাশে থাকবে বলে আমি আশা করছি।
আলোচনা অনুষ্ঠানে এইচসিএমপির অধীন শিক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট সেক্টর লিড খান মোহাম্মদ ফেরদৌস। এতে বলা হয়, ব্র্যাক এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে ৭৩ হাজার ১৮২টি ছেলে-মেয়েকে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার আওতায় এনেছে। ব্র্যাকের লক্ষ্য, ভবিষ্যতে ১ হাজার সেন্টারের মাধ্যমে ১ লাখ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের এই ধরনের শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা।
ব্র্যাক জানিয়েছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এলসিএফএ (লার্নিং কম্পিটেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাপ্রোচ— গাইডলাইন ফর ইনফরমাল এডুকেশন প্রোগ্রাম) কারিকুলামের আওতায় লেভেল ১ থেকে লেভেল ৪ পর্যন্ত এবং হোস্ট কমিউনিটিতে বাংলা ভাষায় সরকার অনুমোদিত প্রাথমিক শিক্ষা কারিকুলামের মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়া মিয়ানমারের কারিকুলামের আলোকে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভাষায় ষষ্ঠ থেকে নবম গ্রেড পর্যন্ত এই শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সরকারের সহযোগিতায় ইউনিসেফ, ইউএনএইচসিআর, এডুকেশন ক্যান নট ওয়েট, দুবাই কেয়ারস, অস্ট্রেলিয়ান সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড, হিলটন ফাউন্ডেশন, এডুকেট আ চাইল্ড, নিপ্পন ফাউন্ডেশন, পর্টিকাস ও ইউবিএসের অর্থায়নে ব্র্যাক এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
সারাবাংলা/টিআর
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বিএনএফই মহাপরিচালক বিএনএফই মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান ব্র্যাক রোহিঙ্গা ক্যাম্প রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা