চট্টগ্রামে মণ্ডপে হামলার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪২ জন আসামি
১৭ অক্টোবর ২০২১ ২১:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় ৪২ জনকে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আসামিরা সবাই বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শনিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. দুলাল হোসেন বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাতকানিয়ার কাঞ্চনা ইউনিয়নে একটি পূজামণ্ডপের গেইট ভাংচুরের ঘটনায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন গ্রেফতার আছেন। বাকিদের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে শনাক্ত করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতাও আছেন।’
গ্রেফতার হওয়া তিনজন হলেন- মো. তারেক হোসেন (১৯), মনিরুল হাসান (১৮) ও আবদুল্লাহ আল তুষার (১৮)। এছাড়া পলাতক মাওলানা আবুল ফয়েজ, নুরুল হক, মুহাম্মদ মজিবুর রহমান, শেখ মহিউদ্দিনসহ আরও ৩৯ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরিফ পাওয়ার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে পূজামণ্ডপে হামলার উদ্দেশে গত শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে জুমার নামাজের পর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাঞ্চনা গ্রামের জোট পুকুরিয়া বাজারে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, জামায়াত ও শিবিরের একদল নেতাকর্মী জড়ো হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সেখানে ৭০-৮০ জনকে দেখতে পান। তারা মিছিল করে জোট পুকুরিয়া এলাকায় সার্বজনীন শিবমন্দির পূজামণ্ডপে হামলার উদ্দেশে অগ্রসর হয়। পুলিশ বাধা দিলে তারা পূজামণ্ডপে ঢুকতে না পেরে গেইট ভাংচুর করে।
এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ও সোর্সের ভিত্তিতে সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে বাকি ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর পাড়ে একটি পূজামণ্ডপে প্রতিমার নিচে কোরআন শরিফ রাখার কথিত অভিযোগ তুলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পূজামণ্ডপ ও মঠ-মন্দিরে হামলা-ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী, গাজীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শতাধিক হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে চারজন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম