Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আঘাত দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না: নৌ প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৩২

ঢাকা: সাম্প্রদায়িক আঘাত দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই এই সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠী আবার নতুনভাবে আঘাত হানা শুরু করেছে। এ আঘাত দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। তারা মাথা নিচু করে, কুকুরের মতো লেজ গুটিয়ে আজকে চোরাগুপ্তা হামলা করছে। এই চোরাগুপ্তা হামলাও বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।’

বিজ্ঞাপন

শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

নৌপ্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে বাংলাদেশকে পঁচাত্তর থেকে আজকে ২০২১, এ দীর্ঘ ৪৬ বছর যাবত বাংলাদেশে একই গল্প শোনানো হয়েছে, সাম্প্রদায়িকতার গল্প। সংবিধানকেক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। পারে নাই।’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। দারিদ্র্যকে দূর করে যখন একটা উন্নত দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। যখন এ বাংলাদেশ রাসেলের মতো শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ দেশে পরিণত হচ্ছে। তখন আমরা কী দেখতে পাচ্ছি! আরেক ধরনের সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে এই বাংলাদেশকে আবার পেছনে টেনে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান সকল ধর্মের মানুষ সম্মিলিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। আজ পর্যন্ত কী নির্ণয় হয়েছে কত লাখ হিন্দু, কত লাখ মুসলমান, কত লাখ বৌদ্ধ, কত লাখ খ্রিষ্টান? সকলেই বাঙালি, এ বাংলাদেশের নাগরিক। সম্মিলিতভাবে এখানে এই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। এই যে, সম্মিলিত রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে সংবিধান রচিত হয়েছিল। আজকে মন্দির ভাঙা হচ্ছে, মসজিদ ভাঙা হচ্ছে, প্যাগোডা ভাঙা হচ্ছে; কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের যে সবচেয়ে বড় মন্দির সংবিধান; যেটাকে জিয়াউর রহমান,এরশাদ ক্ষত-বিক্ষত করেছিল। সে কথা কেউ বলছে না। দেশের যে মন্দির; সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে অপরাধী ও খুনিদের পক্ষ অবলম্বন করল। এ সংবিধানকে খুনি এবং অপরাধীরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করল, সে কথা কেউ বলছে না।’

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে না পারব; ততক্ষণ পর্যন্ত এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বারবার আঘাত করতে পারে। কিন্তু পারবে না; পঁচাত্তরের১৫ আগস্ট রাসেলকে হত্যা করে তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে নাই। আজকে এইবাংলাদেশে কোটি কোটি রাসেল জন্ম নিয়েছে। এটা তো থামাতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যে জঘন্য ঘটনা, নির্মমতার যে মূল উদ্দেশ্য; মানুষ যত জানতে পারছে, ততই ওরা ঘৃণিত হচ্ছে। এরা নতুন প্রজন্মের কাছে আরো বেশি ঘৃণিত হবে। নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানছে, এই ইতিহাস তো জানতে দেওয়া হয়নি। খুনি এবং অপরাধীদের পক্ষেই ইতিহাস লেখা হয়েছিল, বলা হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে সেভাবেই ব্যবহার করা হয়েছিল।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে, সবকিছুর  বিনিময়ে তিনি এ বাংলাদেশকে আজকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। উন্নতির শিখরে শেখ হাসিনার যে দর্শন; প্রতিহিংসা নয়, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রকে চর্চা করে এবং একটা দেশের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানোর মধ্য দিয়েই এই পঁচাত্তরের খুনিদের মূল উদ্দেশ্যকে কবর রচনা করা; আজকে সেই জায়গার দ্বারপ্রান্তে আমরা চলে আসছি।’

পঁচাত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খুনিরা শেখ রাসেলের প্রতিভাকে ভয় পেয়েছিলো। কাজেই তাকেও রাখা যাবে না। শেখ রাসেলের এ বিষয়গুলো যত আলোচনা হবে, জিয়া, এরশাদ খালেদা জিয়ার কালো অধ্যায়গুলো মানুষ জানতে পারবে। আজ পর্যন্ত এ খুনিরা বলে না, এ শিশুকে হত্যা করা অপরাধ ছিল। তারা এখন পর্যন্ত ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে, তাদের পক্ষাবলম্বন করে আসছে। এই রাসেল দিবস; এটাই হচ্ছে আমাদের অর্জন। যে রাসেলকে খুনিরা হত্যা করেছে, সেই রাসেল আজকে দেশ-মাতৃকার জন্য কথা বলছে। আজকে দেশ রাসেলকে ধারণ করে আগামী দিনের শিশুদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিচ্ছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)’র কনফারেন্স রুমে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আলমগীর, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব লায়লা জেসমিন, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম।

এর আগে, নৌ প্রতিমন্ত্রী সেখানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাও কর্মচারীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সারাবাংলা/একে

১৫ আগস্ট শেখ রাসেল শেখ রাসেল হত্যাকাণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর