ঢামেকে আবারও অজ্ঞান পার্টির কবলে রোগী ও স্বজনরা
১৯ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৪৯
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আবারও অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কার খোয়া গেছে রোগী ও স্বজনদের। ভুক্তভোগীরা হলেন- গাইনি রোগী মিতা আক্তার (২৫), তার ছোট বোন খুশি আক্তার (২০) ও আরেক রোগী শাহিনুর বেগম (৪০)।
রোগী মিতা আক্তারের শ্বশুর আনোয়ার হোসেন বলেন, চার দিন আগে মিতাকে ঢাকা মেডিকেলের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। তাকে দেখাশুনার জন্য মিতার ছোটবোন খুশিও সাথে থাকতেন। নিরাপত্তার স্বার্থে আনসার সদস্যরা রাতে রোগীর সাথে বাড়তি লোক থাকতে দেয় না। এজন্য তারা ওয়ার্ডের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্যরাতে রোগীর খোঁজ নিতে বেডে গিয়ে দেখি, মিতা ও তার ছোট বোন অচেতন অবস্থায় বেডে পড়ে আছে। অনেক ডাকাডাকি করেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনই বুঝতে পারি তাদের চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে। দ্রুত তাদের দুজনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে স্টোমাক ওয়াশ করানো হয়।
তিনি আরও জানান, একই সময়ে ওই ওয়ার্ডের বারান্দায় শাহিনুর (৪০) নামে আরও এক নারীকেও জুস খাইয়ে তার কানের স্বর্ণের দুল নিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী মিতা আক্তার বলেন, রাতে মধ্যবয়সী এক নারী দুইটা জুস ও কেক নিয়ে এসে তাদের বলে, বারান্দা থেকে তার শ্বশুর কিনে পাঠিয়েছেন। তাদেরকে খেতে বলেছেন। তখন ওই নারীর পরিচয় জানতে চাইলে বলে তিনিও রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন।
তিনি জানান, জুস ও কেক দিয়ে ওই নারী ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তারা দুইবোন সেগুলো খায়। এর কিছুক্ষণ পরই তারা অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর কী ঘটেছে তা কিছুই টের পাননি।
মিতা দাবি করেন, তাদের বেডের পাশে রাখা ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। গতকালই চিকিৎসার জন্য ওই টাকা বাবা দিয়ে গিয়েছিলেন। আর খুশির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নিয়ে গেছে।
মানিকগঞ্জ শিবালয় উপজেলার চাইরপাড়া গ্রামের রিকশা চালক মামুনের স্ত্রী মিতা। আর তার ছোটবোন খুশি থাকেন একই উপজেলায়। পেশায় গার্মেন্টস কর্মী খুশি। আর শাহিনুরের বাড়ি দিনাজপুর চিবিরবন্দর উপজেলার। তার স্বামীর নাম আবু বক্কর সিদ্দিক।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, রাতে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতর তাদেরকে চেতনানাশক খাইয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল লুটের ঘটনা ঘটেছে। তাদেরকে স্টোমাক ওয়াশ করানো হয়েছে। বর্তমানে গাইনি ওয়ার্ডের বেডেই রয়েছেন তারা।
এর আগে গত ২২ আগস্ট ঢাকা মেডিকেলের একই ওয়ার্ডে জহুরা খাতুন (৬০), মেয়ে জামাই আমির হোসেন (৩৫), জহুরা খাতুনের নাতনি সুমনা আক্তারকে (২০) অচেতন করে টাকা মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কারে লুটের ঘটনা ঘটেছিল।
সারাবাংলা/এসএসআর/এএম