ক্যাম্পাসের নীরবতা ভেঙেছে শাটলের হুইসেলে
১৯ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৫২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর সচল হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। দীর্ঘদিন পর ক্যাস্পাসে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের একমাত্র বাহন শাটল ট্রেনও চলাচল শুরু করছে। প্রতিদিন সকালে শহরের বটতলী স্টেশন থেকে এক জোড়া শাটল ক্যাম্পাসে উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। চিরচেনা শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ক্যাম্পাসের নীরবতা ভেঙেছে শাটলের হুইসেলে। আর শিক্ষার্থীদের পদচারণায়, গল্পে, গানে ও চায়ের আড্ডায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি চত্বর জিরো পয়েন্ট, বুদ্ধিজীবি চত্বর, শহীদ মিনার, জয় বাংলা ভাস্কর্য, কলা জুপড়ি, লেডিস জুপড়ি ও সমাজ বিজ্ঞান জুপড়িসহ সবখানেই ফিরে পেয়েছে প্রাণের ছোঁয়া। ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীকেই ক্যাম্পাসে আসতে দেখা যায়। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে ফিরেছেন। এসেছিলেন ঘুরতে, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে আর আড্ডায় মেতে উঠতে। ক্যাম্পাসের এই প্রাণোচ্ছল পরিবেশ যেন আর থমকে না যায় এই প্রত্যাশা সকল শিক্ষার্থীর।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে ১৯ মাস বন্ধ ছিল ক্যাম্পাস। যে যার মতো বাড়িতে অবস্থা করতে হয়েছে। এখন ক্যাম্পাস খুলছে, বন্ধুরা এসেছে। তাদের দেখে খুব ভালো লাগছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে শাটল ট্রেন চেনা রুপে চলাচল শুরু করছে। এই রুপে আবার ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। দীর্ঘদিন পর এই অপেক্ষার অবসান হলো।’
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নুর নবী রবিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর ক্যাম্পাস খুলছে, খুবই আনন্দ লাগছে। এভাবে আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে যেন একাডেমিক কার্যক্রম শেষ হয়। কেউ যে অসুস্থ না হয়, কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে— এ কামনাই করছি৷’
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস খুলছে, অনেক শিক্ষার্থী এসেছেন। তাদের দেখে আগের অনুভূতি ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে যে শূন্যতা ছিল, তা এখন পূর্ণতা পেয়েছে। বন্ধের সময় বন্ধুদের অনেক মিস করছি। এখন সবাই আসছে, জমে থাকা কথাগুলো শেয়ার করতে পারব। সবকিছু ভালো লাগছে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেনের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮০ সালে। এরপর থেকেই এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। এই শাটল ট্রেনে এখানকার শিক্ষার্থীদের মাঝে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। কখনো এটি গড়ায় প্রণয়ে। এখানেই ভাগাভাগি হয় জীবনের সংকটের কথা, হয় আড্ডা, খুনসুটি। করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আবারও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ায় পুনরায় চালু হলো এই শাটল ট্রেন।
সারাবাংলা/এনএস