রেহানাকে দায়িত্ব দিয়ে বিশ্রামে যান— প্রধানমন্ত্রীকে জাফরুল্লাহ
১৯ অক্টোবর ২০২১ ১৯:১৬
ঢাকা: ছোট বোন শেখ রেহানাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গণাস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বীর উত্তম মেজর হায়দার আলী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ পরামর্শ দেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘পীরগঞ্জে আপনার শ্বশুর বাড়ি। আপনার ছেলে ওখানকার ভোটার। আপনার তো নৈতিক দায়িত্ব তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া। কিন্তু সেখানে আপনি যাননি। অনুগ্রহ করে আজকেই আপনি সেখানে যান। প্রথম দিন যদি কুমিল্লায় যেতেন, তাহলে পীরগঞ্জের ঘটনা ঘটতো না।’
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি দেশের জন্য অনেক খেটেছেন। আপনি মানসিক এবং শারীরিকভাবে অসুস্থ। আপনি এত পরিশ্রম করেছেন যে, যার ফলাফল শরীরে এসেছে। আপনার এখন বিশ্রাম দরকার। দয়া করে শেখ রেহানার কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিশ্রামে যান’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিনই ওয়াজ-মাফহিল করেন, কেউ কিছু করলে রেহাই পাবা না। কিন্তু আমরা যদি নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাইবান্ধার বিগত দিনের ইতিহাস দেখি, তাহলে তার (প্রধানমন্ত্রীর) ওই হুমকি-ধামকি ওয়াজ-মাহফিল ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। তার প্রশাসন মেয়েদের ফুটবল খেলতে দেয় না। আহমাদিয়াদের ঘরের ভেতর মিটিং করতে দেয়নি। এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনো বক্তব্য নাই। তার ওয়াজ মাহফিলের কথা একটাই- কঠিন শাস্তি দেব, কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। এসব বলে তিনি পুলিশের আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অর্থাৎ যাকে পার তাকে ধর।’
‘শুধু জাফরুল্লাহকে ধইরো না, জেলখানায় মারা যেতে পারে। তার বিরুদ্ধে মাছ চুরির মামলা দাও। কোর্টে দাঁড়িয়ে থাকুক ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ওটা কিন্তু জেলে যাওয়ার চাইতেও খারাপ। আমি হাঁটতে পারি না, প্রতিদিন কোর্টের দরজায় চার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আমাকে তারা জেলে যাওয়ার চাইতে বেশি কষ্ট দিয়েছে। এর একটি মাত্র কারণ আমি সত্য কথা বলি’— বলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যে লুট হয়েছিল, যে ডাকাতি হয়েছিল, সেটাতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল পুলিশ। তাদের প্রথম দাবি ছিল, পুলিশের আইজিপিকে সিনিয়র সচিব করতে হবে। তারা আরও কিছু দাবি করেছিলেন। সেগুলো এখনো পূরণ হয়নি। ফলে পুলিশের মধ্যে ক্ষোভ রয়ে গেছে।’
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘পূজামণ্ডপে ঘটে যাওয়া ঘটনার ১০ দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আশ্বস্ত করেছেন- এবার পুজামণ্ডপে কোনো দুর্ঘটনা ঘটবে না। প্রতিটা মন্দির নিরবিচ্ছিন্নভাবে রক্ষা করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার কিছু গোয়েন্দাবাহিনী আছে, যে বাহিনীর আসল হর্তাকর্তা ‘র’।’
‘মোদিবিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার আলেমদের মুক্তির দাবিতে আলেমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছেন। সেটা ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী পছন্দ করে নাই। তাই তাকে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) একটু অপমান করল। ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী সংখ্যালঘুদের দিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটু ঠেঙ্গানি দিল’— বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ৬৯‘ গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আসাদের ছোট ভাই ডা. নূরুজ্জামান, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান। উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য আক্তার হোসেন ও হাবিবুর রহমান রিজু।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম