‘পদোন্নতি হবে যোগ্যতা অনুযায়ী, ঘুরতে হবে না কাউকেই’
২০ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৫৮
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চিকিৎসকদের পদোন্নতি দেওয়া হবে যোগ্যতা অনুযায়ী। কাউকেই এ জন্য ঘুরতে হবে না। গার্ডিয়ানের কাছে কখনো চাইতে হয় না। ভালো কাজ হলে অভিভাবক এমনিতেই সব দেয়।
বুধবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেন। আপনাদের কাজের ওপর সরকারের ইমেজ নির্ভর করে। তাই গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আপনাদের আরও সচেতন হতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেকেই বিভিন্ন দাবির কথা জানিয়েছেন। ভালো মানের বাসার কথা বলেছেন। ভালো থাকার জন্য ভালো জায়গা অবশ্যই যৌক্তিক। আপনাদের দাবি আরও বেশি যৌক্তিক, কারণ আপনারা ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন। আপনাদের জন্য আগে ভালো গাড়ি ছিল না। এখন আপনাদের যেই গাড়ি দেওয়া হয়েছে, সে গাড়ি আমারও নেই। স্বাস্থ্য সচিব, মহাপরিচালকেরও নেই। সীমিত সম্পদ নিয়ে আমরা কাজ করি।’
ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজে এই মুহূর্তে কোনো ভ্যাকসিন উৎপাদন না করলেও দেশে এখন পৃথিবীর উৎপাদিত প্রায় সবধরনের ভ্যাকসিনই চলে এসেছে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক মহলে সম্পর্কের কারণে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, দেশের সব মানুষকে তিনি ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসবেন। তিনি তার কথা অনুযায়ীই আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরাও প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী দিন-রাত একাকার করে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই দেশে করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রতি মাসে তিন কোটি এবং তার থেকে বেশি ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। চলমান থাকলে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫০ শতাংশ মানুষের কার্যক্রম কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্যখাত ইতোমধ্যেই দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছে। যেভাবে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশে ভ্যাকসিন আসছে এতে করে ডিসেম্বরের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার অন্তত পঞ্চাশ ভাগ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলগামী শিশুদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। যাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারাও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করে ভ্যাকসিন নিতে পারবে। ক্রমান্বয়ে দেশের সব মানুষই ভ্যাকসিন পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে প্রতি মাসে দেশে অন্তত ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আসবে। চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিন চুক্তি অনুযায়ীই চলে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে চুক্তি অনুযায়ী আরও ভ্যাকসিন আসা শুরু হয়েছে। ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের ভ্যাকসিনও চলে আসছে। কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় ফাইজার, মর্ডানা ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও দেশে আসছে। আমরাও ইতোমধ্যেই প্রমাণ করেছি, স্বাস্থ্যখাত চাইলে একদিনে ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিনও দেওয়া সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিকন ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এবাদুল করীম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাচিপের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ প্রমুখ। সভায় মূল প্রতিপাদ্য পাঠ করেন ইউএইচএফপিও’র আহ্বায়ক ডা. মোবারক হোসেন।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম