Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দ্রব্যমূল্যের উত্তাপ সইতে না পেরে বিজিবি সদস্যের ‘আত্মহত্যা’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৩:০৯

ময়মনসিংহ: নিজের কাছে থাকা অস্ত্রের গুলিতে এক বিজিবি সদস্য ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে জানা গেছে। নিহত বিজিবি সিপাহী সোহরাব হোসাইন চৌধুরী (২৩) ফেনীর পরশুরাম থানার বাসিন্দা।

শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন এই বিজিবি সদস্য। পরে রাত নয়টার দিকে ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকায় ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেন।

ওই বিজিবি সদস্য ফেনীর পরশুরাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। এ বিষয়ে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজিবি ৩৯ ব্যাটালিয়নের সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল তৌফিকুর রহমান।

সোহরাব হোসাইন চৌধুরীর ফেসবুক পোস্ট নিচে তুলে দেওয়া হলো-

তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি কিন্তু বেতনটা ওই নামের ওপরই (স্যাড রিঅ্যাক্ট)। সাত বছর চাকরি এখনো বাড়িতে গেলে ঠিকমতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না। ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়। গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো। মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মায়ের জন্য ওষুধ কিনবো সে টাকা আর হাতে নেই। পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে কিছু ওষুধ আর গাড়ি ভাড়া দিলাম।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি হতাশা ব্যক্ত করে তিনি লেখেন, এমনটা প্রতিমাসেই হতে থাকে। না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে কিংবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে। না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে (ডাবল স্যাড রিঅ্যাক্ট)। তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি এতে বাজার করা কিংবা সংসার চালানো কতটা কঠিন বুঝানোর মতো না।
ছোট ভাইটা শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। তার জন্য কিছু করব তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে।
একটা নির্দিষ্ট বয়স পর থেকে বিয়ের কথা শুনতে শুনতে ছিলেন ত্যক্ত-বিরক্ত। সেই বিষয়ে লিখেছেন, এমন পরিস্থিতিতে মানুষ প্রশ্ন করে বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আর সরকারি চাকরির ভেতরটা দেখাতে পারি না। আমার বেতন আমার সুযোগ-সুবিধা সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘাঁ। তাই বিয়ে শাদীর চিন্তাও করি নাই। শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি, এমন চাইলাম তাও আর হয়ে উঠলো না। সাতটা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে সত্যিই বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এবার একটু রেস্ট দরকার।

বিজ্ঞাপন

পরিশেষে ক্ষমা চেয়ে নেন চারপাশের মানুষজনদের কাছে। তিনি লেখেন, আমার পরিবার সহকর্মী সিনিয়র-জুনিয়র আমার বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য পারলে ক্ষমা করবেন। এই ছাড়া বিকল্প কোনো পথ আমার ছিল না।

সারাবাংলা/এএম

আত্মহত্যা বিজিবি সদস্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর