‘শ্রমিক অধিকার পরিষদ নেতার বাসায় বসে হামলার পরিকল্পনা’
২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৯:০৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীতে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া হাবিবুল্লাহ মিজান নামে একজন আদালতে দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলার পরিকল্পনা হয়েছে নগরীতে শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতা মোক্তার আহমেদের বাসায়।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. সফি উদ্দিনের আদালতে কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হাবিবুল্লাহ মিজান ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নগরীর জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে হামলার মামলায় গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে আমরা হাবিবুল্লাহ মিজানসহ সাতজনকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আদালতে হাজির করা হলে হাবিবুল্লাহ মিজান ১৬৪ ধারায় ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি জেএম সেন হলে পূজামণ্ডপে হামলার পরিকল্পনা থেকে হামলা পর্যন্ত পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।’
ওসি নেজাম জানিয়েছেন, গ্রেফতার হাবিবুল্লাহ মিজান সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের অনুসারী। নুরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম বন্দর থানা শাখার সাবেক আহবায়ক। বর্তমানে তিনি নুরের সংগঠন যুব অধিকার পরিষদের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, জবানবন্দিতে হাবিবুল্লাহ মিজান জানিয়েছেন, গত ১৩ অক্টোবর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখা নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার পর নগরীর হালিশহরে শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহবায়ক মোক্তার আহমেদের বাসায় ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতারা বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর সাধারণ মুসল্লীদের নিয়ে মিছিলের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তারা মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে কয়েকজন গিয়ে জেএম সেন হলে তোরণের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। এসময় পুলিশ গুলি ছুঁড়লে তারা চেরাগি পাহাড়ের দিকে চলে যান।’
গত বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রাম নগরী এবং সাতকানিয়া উপজেলায় অভিযান চালিয়ে নুরের সংগঠন ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের ৯ নেতাকর্মীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। এদের মধ্যে সাতজনকে শুক্রবার আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি তিনজনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়নি।
রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা সাতজন হলেন- মো. নাছির (২৫), মিজানুর রহমান (৩৭), মো. রাসেল (২৬), ইয়াসিন আরাফাত (১৯), হাবিবুল্লাহ মিজান (২১), মো. ইমন (২১) এবং ইমরান হোসেন। এদের মধ্যে ‘হামলার পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদাতা’ নাছির যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক এবং মিজানুর রহমান সদস্য সচিব। রাসেল ওই সংগঠনের বায়েজিদ বোস্তামি থানা শাখার আহবায়ক। এছাড়া ইমন ছাত্র অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল নেতা।
গত ১৫ অক্টোবর দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হলে পূজামণ্ডপে হামলা চালানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা মিছিল নিয়ে এসে সাধারণ মুসল্লীদের উত্তেজিত করে মণ্ডপে হামলা সংগঠিত করে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/একে