‘সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দায়ী’
২৪ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৫০
ঢাকা: কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়ী করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, কুমিল্লার ওই ঘটনা যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড না হতো তাহলে সারাদেশে এই সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এমন সব ঘটনার দায় ফেইসবুক এড়াতে পারে না।
রোববার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সম্পাদক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রংপুরের পীরগঞ্জের ঘটনাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে ঘটেছে। আমি ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলাম। সেখানে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত পার্লামেন্টরি কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তখন ইউরোপে একটি এ সংক্রান্ত জরিপ হয়েছিল। সে জরিপে ইউরোপের ৮০ ভাগ মানুষ মনে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেক ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও হুমকি। এ বিষয়টি নিয়ে তখন বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম।
রামু এবং নাসিরনগরে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটেছিল তার জন্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দায়ী উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আমি তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত পার্লামেন্টরি কমিটির চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এক্ষেত্রে আপনারা কিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তখন তিনি বলেছিলেন, যার কারণে অঘটন ঘটে তাকে প্রথমে খুঁজে বের করা হয়। যদিও তাকে খুঁজে বের করা কঠিন। কারণ তিনি লুকিয়ে পোস্ট দেয়। তাই আমরা অথরিটিকে খুঁজি।
মন্ত্রী বলেন, এটা শুধু আমাদের দেশেই না বিশ্বব্যাপী এ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
তিনি বলেন, সব ধরনের সিম কিনতে জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার হয়। একজন ব্যক্তি কতগুলো সিম ব্যবহার করতে পারবে সে বিষয়ও সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। পাশাপাশি একটি করপোরেট হাউজ কতগুলো সিম পাবে তা ও নির্ধারণ করা আছে। সরকারের পক্ষ থেকে আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন বাংলাদেশেও আইডি কার্ড দিয়ে যেন ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে পারে সে বিষয়ে বলা হয়েছিল। বাংলাদেশের এই প্রস্তাবে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়নি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সবই ফেইসবুকে ভুয়া পোস্ট দেওয়ার জন্য ঘটেছে। আর এর দায় ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কোনোভাবে এড়াতে পারে না। এ নিয়ে ভাবার দরকার এখন। এ সপ্তাহেই আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করব।
তিনি বলেন, শুধু ফেইসবুক পোস্টের জন্যই এটি ঘটেছে, এককভাবে সে দোষও দেওয়া যাবে না। যে ব্যক্তি কোরআন রেখেছে সে দায়ী। যে করিয়েছে সে দায়ী, যে ভিডিও করে পোস্ট করেছে সে দায়ী। আর এই পোস্ট দেখে যারা সহিংসতা ঘটিয়েছে তারাও দায়ী। সেদিক থেকে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ দায়ী তা বলা যাবে না। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কিন্তু সবকিছু এমনভাবে পরিচালিত হোক যেন এই মাধ্যম খারাপ কাজে ব্যবহৃত না হয়।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ