হালদায় মরা ডলফিন, ধারণা ‘খুন করা হয়েছে’
২৪ অক্টোবর ২০২১ ২০:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হালদা নদী থেকে মৃত অবস্থায় একটি ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। জালে আটকা পড়ার পর ধারালো বস্তু দিয়ে আঘাত করে ডলফিনটির মৃত্যু ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রোববার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা এলাকা থেকে ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা ডলফিনটি ভাসতে দেখে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের খবর দেয়। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিচার্স ল্যাবরেটরির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।
ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডলফিনটি একেবারে পচে গেছে। কয়েকদিন আগেই এর মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। স্বেচ্ছাসেবকরা নদী থেকে সেটি উদ্ধার করেন। পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধে ওজন নেওয়া যায়নি। দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ ফুট। সেটিকে হালদার পাড়েই মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।’
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মৃত ডলফিনটির পিঠে আমরা দু’টি ক্ষতচিহ্ন পেয়েছি। সেগুলো সুস্পষ্টত আঘাতজনিত ক্ষতচিহ্ন। ধারণা হচ্ছে, ডলফিনটি সম্ভবত জালে আটকা পড়েছিল। এরপর ধারালো কিছু দিয়ে খুঁচিয়ে সেটিকে হত্যা করা হয়েছে।’
গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনের বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়। গত চারবছরে হালদা নদী থেকে ৩২টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে।
এর মধ্যে পাঁচটি ডলফিনকে ‘খুন’ করা হয়েছে। ১৬টি আঘাতজনিত কারণে এবং ১১টি জালে আটকা পড়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষক মনজুরুল কিবরিয়া।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাত্র ছয় মাসে হালদা নদীতে ১৮টি মৃত ডলফিন পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পাওয়া যায় ১০টি মৃত ডলফিন। আর ২০২১ সালে এ পর্যন্ত মোট চারটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে এ পর্যন্ত দু’টি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম