Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুদ ব্যবধান মানছে না কয়েকটি ব্যাংক: বাংলাদেশ ব্যাংক


১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ২০:৫৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

সম্প্রতি আমানতের সুদহারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঋণের সুদহার কমানো হলেও মানছে না কয়েকটি ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানতের সুদ ব্যবধান (স্প্রেড) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত সীমায় নামছে না।

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে দেশি-বিদেশি খাতের ১০টি ব্যাংকের স্প্রেড এ সীমার বাইরে ছিল। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি স্প্রেড রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংকের। এর পরেই রয়েছে বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলো হলো, স্টেড ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, এবি ব্যাংক, এইচএসবিসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, দ্য সিটি ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোন ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। তাই স্প্রেড পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বারবার নির্দেশনা দেয়া হলেও তা মানছে না এ সব ব্যাংক। ফলে তাদের স্প্রেডও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিক সীমায় নামছে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগে কাঙ্ক্ষিত গতি না ফেরায় অনেক ব্যাংকের কাছে প্রচুর পরিমাণ উদ্বৃত্ত তারল্য পড়ে আছে। আবার বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের জেরে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বাড়ছে। এর মধ্যেই বছর শেষে ভাল মুনাফা অর্জনের টার্গেটে এগুচ্ছে ব্যাংকগুলো। ফলে তারা আমানতকারীদের কথা না ভেবেই আমানতের সুদ বেশি হারে কমিয়ে দিচ্ছে। আবার অতি মুনাফার আশায় ঋণের সুদ কমাচ্ছে অপেক্ষাকৃত কম হারে। দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংকগুলোর এই দ্বৈতনীতি চলছে। এতে আমানতকারি ও ঋণগ্রহীতা উভয় গ্রাহকই ঠকছেন।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর মাসে বিদেশি খাতের- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, এরি ব্যাংক, এইচএসবিসি ও সিটি ব্যাংক এনএ এবং বেসরকারি খাতের- ব্র্যাক ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংকের স্প্রেড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশিত সীমার বাইরে রয়েছে। এছাড়া নতুন প্রজন্মের দ্য ফারমার্স ব্যাংক রয়েছে এ তালিকায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক আমানতের বিপরীতে গড়ে এক দশমিক ২০ শতাংশ সুদ দিয়েছে। আর ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকটি ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ সুদ নিয়েছে। ফলে বিদেশি খাতের এ ব্যাংকটির স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়া ব্র্যাক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে সুদ দিয়েছে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর ঋণের বিপরীতে সুদ নিয়েছে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর ডাচ্ বাংলা ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ২ দশমিক ২৭ শতাংশ সুদ দিলেও ঋণের ক্ষেত্রে আদায় করেছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। ফলে ব্যাংকটির স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, বিদেশি ব্যাংকগুলোর স্প্রেড এখনও পাঁচ শতাশের ওপরে রয়েছে। অক্টোবরে বিদেশি ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে এক দশমিক ৬৩ শতাংশ সুদ দিয়েছে। অন্যদিকে ঋণের বিপরীতে আদায় করেছে ৮ দশমিক ০২ শতাংশ সুদ। ফলে এ খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তবে দেশীয় খাতের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড ৫ শতাংশের নীচে রয়েছে। অক্টোবরে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে গড়ে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আর আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ সুদ। ফলে তাদের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে গড়ে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আর আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ সুদ। ফলে স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তবে বিশেষায়িত ব্যাংকের স্প্রেড সবচেয়ে কম; যা মাত্র ২ দশমিক ৮২ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, গত অক্টোবর শেষে সার্বিক ব্যাংকিং খাতে আমানতের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ঋণের গড় সুদ দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ফলে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর