লকডাউনেও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণে নতুন রেকর্ড
২৬ অক্টোবর ২০২১ ০০:২৫
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন দেওয়া সত্ত্বেও ২০২০ সালে রেকর্ড পরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হয়েছে। কপ ২৬ জলবায়ু সম্মেলনে জাতিসংঘের আবহাওয়া প্রধান বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে এখন থেকেই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে সামনে ভয়াবহ ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।
আবহাওয়া প্রধান পেটেরি তালাস বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেওয়া লকডাউন স্বত্বেও ২০২০ বায়ুমণ্ডলে তাপমাত্রা বাড়ায় এমন গ্যাসের নিঃসরণে রেকর্ড গড়েছে। গ্রিনহাউজ গ্যাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ হয়েছে সবচেয়ে বেশি যা শিল্প বিল্পবের আগের সময়ের নিঃসরণের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। শিল্প বিপ্লবের পরই মূলত ফসিল ফুয়েল বা পাকৃতিক জ্বালানি পোড়ানো শুরু হয়। ১৭৫০ সালের তুলনায় মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ হয়েছে দ্বিগুনেরও বেশি। এছাড়াও ২০২০ সালে বাকিসব গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণের হারও ছিল অতি দ্রুত যা ২০২১ সালেও অব্যাহত আছে।
শুধুমাত্র গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ বন্ধ করলেই বায়ুমণ্ডলে গ্যাসের মাত্রা স্থিতিশীল হবে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করবে যা বন্যা, খরা ও হিটওয়েভ ঠেকাতে সক্ষম হবে। আর যদি বর্তমান হারে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ হতে থাকে তবে এ শতকের শেষ নাগাদ গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ থেকে ২ সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পাবে যা প্যারিস চুক্তিতে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। আর সেটির ভুক্তভোগী আমরা না হলেও আমাদের সন্তান ও তাদের সন্তানরা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়া প্রধান।
তিনি বলেন, কয়লা, তেল ও গ্যাস পোড়ানোর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৬৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য দায়ী। আর এটি কমানো খুব একটা অসম্ভব নয় বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। কলকারখানা, জ্বালানি ও যানবাহন ব্যবস্থা নতুন করে অর্থাৎ প্রকৃতিবান্ধব করে গড়ে তুলতে খুব বেশি অর্থ বা প্রযুক্তিরও দরকার নাই। নষ্ট করার মত সময় একদমই নাই বলে সবাইকে সতর্ক করেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে দেওয়া লকডাউনের ফলে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক এই স্থবিরতা স্বত্বেও বায়ুমণ্ডলে কয়েক বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হচ্ছে যা সামগ্রিক বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতিতে কোন উন্নয়ন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে।
ডাব্লুএমও প্রধান আরও বলেন, জলবায়ু সংকট ক্রমাগত খারাপ দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সামিটে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন বন্ধ করার যে লক্ষ্য তার কাজ করার জোর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান তিনি।এসব সতর্কতা উল্লেখ করে তিনি কপ ২৬ সম্মেলনে উপস্থিত দেশগুলোর কাছ থেকে পরস্থিতির উন্নয়ন অর্থাৎ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি চান।
সারাবাংলা/আরএফ/