‘কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে হামলার ইন্ধনদাতাদের নাম প্রকাশ শিগগিরই’
২৬ অক্টোবর ২০২১ ১৩:৩০
ঢাকা: কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে হনুমানের পায়ের কাছে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১০টি মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি বলেছেন, আটকদের জবানবন্দী নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের নাম শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টাস ফোরামের (বিএসআরএফ) নিয়মিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি বলে গেছেন এদেশ সবার, এদেশে ধর্ম নিয়ে বৈষম্য হবে না। এদেশ হবে ধর্ম নিরপেক্ষ। আমরা সে আদর্শই ধারন করে চলেছি।
তিনি বলেন, আমি দেখেছি হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে যার যার ধর্ম পালন করে আসছেন। কিন্ন্তু বর্তমান সময়ে দেখি পূজা মণ্ডপে সহিংসতা হচ্ছে। কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে কে বা কারা কোরআন শরিফ রেখে দিয়ে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। একটা উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।
প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা শুরুতেই ধরে নিয়েছিলাম যে পূজা মণ্ডপে কোরাআন রাখার বিষয়টি কোনো এক জায়গার ইন্ধন থেকে হয়েছে। আমাদের পুলিশের সকল পর্যায়ের টিম সেখানে পাঠিয়েছিলাম যেন প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হয়। আমরা দেখলাম একটা মসজিদের পাশে একটা পুকুর ছিল। পুকুরের মাছ চাষী মসজিদের বারান্দায় একটা ক্যামেরা বসিয়েছে, যেখানে পরিস্কার দেখা গেছে কেউ মসজিদ থেকে কোরআন নিয়ে হনুমানের গদার স্থানে কোরআন রেখে গদা নিয়ে বেড়িয়ে চলে এলেন।
মন্ত্রী বলেন, যখন এ ঘটনা সামনে চলে এলো তখন কোরআন রাখা সেই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি, তার নাম প্রকাশ করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেই সহিংসতার ঘটনায় ১০টি মামলা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ওই ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিজয় দশমী ছিল শুক্রবার। আমাদের ধারণা ছিল ওইদিন জুম্মার নামাজের পর অসুবিধা হতে পারে। আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বলেছিলাম তার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেবেন এবং তারা তা করেছেন। আমাদের নামাজও ঠিকভাবে শেষ হল। কিন্তু কিছু লোক দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সহিংসতা করেছে। এক পক্ষ পুলিশের সামনে হল্লা শুরু করল, আরেকপক্ষ পুলিশকে ব্যস্ত রেখে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলও বেশ কিছু ভাঙচুর হয়েছে। ওই সময় পুকুরে ঝাপ দেওয়ায় একজন মারা গেছেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে এ সহিংসতা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে শিগগিরই তা উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রংপুর ও নোয়াখালীর ঘটনায় ইন্ধনদাতাদের নাম বলেছে গ্রেফতাররা। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তারা এসব নাম জানিয়েছেন। তবে আমরা শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর আপনাদের সামনে নাম প্রকাশ করব। সেখানে বিএনপি- জামায়াত জড়িত আছে কি না সেটা এখই বলতে চাচ্ছি না। আমরা নিশ্চিত হয়েই আপনাদের সবকিছু জানাতে চাই।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ