Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিতু হত্যা: বাবুলের নারাজি আবেদনের আদেশ ৩ নভেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ অক্টোবর ২০২১ ১৩:১৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্ত্রী খুনের ঘটনায় প্রথম মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দাখিল করা নারাজি আবেদনের শুনানি হয়েছে। কারাবন্দি বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে শুনানির পর আদালত ৩ নভেম্বর আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালতে নারাজি আবেদনের শুনানি হয়েছে।

জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, শুনানিতে আমি বলেছি- প্রথম মামলার দুইজন আসামি জবানবন্দিতে বলেছেন- মুছার নির্দেশে তারা মিতুকে খুন করেছেন। সেই মুছাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ফেলেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী তদন্ত কর্মকর্তারা সফটওয়্যারের মাধ্যমে মোবাইলের কললিস্ট পর্যালোচনা করেছেন। কিন্তু কোথাও বাদীর (বাবুল আক্তার) সঙ্গে মুছার যোগাযোগের প্রমাণ পাননি। পাঁচ বছর পর এসে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে বাবুল আক্তারকে ফাঁসানো হয়েছে বলে বাদীর কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। আদালত বক্তব্য শুনেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। ৩ নভেম্বর আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

আইনজীবী সাইমুল আরও জানান, বুধবার আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে আরও একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। প্রথম মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিতুর মা-বাবাকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত ছবি প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু প্রথম মামলার নথিতে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংযুক্ত নেই বলে বাদী ও তার আইনজীবী জানতে পেরেছেন। আদৌও সেটি আছে কি না আদালতের কাছে তা জানতে আবেদন করেছিলেন। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।

বিজ্ঞাপন

ফেনী কারাগারে থাকা বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরের জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। বুধবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির পুরো সময় তিনি চুপচাপ ছিলেন। তবে আইনজীবী এবং নিজের ভাইয়ের সঙ্গে নিচু স্বরে কথা বলতে দেখা যায়।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে।

স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।

চলতি বছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।

বিজ্ঞাপন

ওইদিনই (১২ মে) বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে আদালতে জবানবন্দি দেননি বাবুল আক্তার।

এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর মামলার এক আসামি এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানিয়েছেন, বিশ্বস্ত সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার মুছাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে খুন করায় তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

মিতু হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর