নদী ভাঙনে হুমকির মুখে আদিবাসীদের বসতভিটা
২৮ অক্টোবর ২০২১ ১৬:৪২
নেত্রকোনা: নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলার মহাদেও নদী থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙ্গনে হুমকির মুখে আদিবাসীদের বসতভিটা ও জীবন-জীবিকা। একদিকে নদী ভাঙন অন্যদিকে জীবিকা হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিলছে তেমন কোনো সাড়া। বন্ধ হচ্ছে না বালু ও পাথর উত্তোলন।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তে ভারত থেকে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি নদী মহাদেও। আর সীমান্ত ঘেঁষেই অবস্থান রংছাতী ইউনিয়নের পাতলাবন ও সন্নাসীপাড়াসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করেছে মহাদেও নদী। স্থানীয় আদিবাসীরা যুগযুগ ধরে বংশপরমপরায় পরম যত্নে এই নদীটিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তারা। একসময় নদী এলাকায় বৈচিত্র্য পাথরে সমাহার স্বচ্ছ পানি ও নির্মল পরিবেশ ছিল। এই মহাদেও নদীর ধারায় দুই তীর ঘেষা স্থানীয় আদিবাসীরা মাছ ধরে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করে চালাতো তাদের জীবন জীবিকা।
বর্তমানে একটি মহল তাদের প্রভাব খাটিয়ে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে গভীর গর্ত করে উঠিয়ে নিচ্ছে বালু ও পাথর। ভেঙে যাচ্ছে নদীর দু’কূল। ফলে নদীর উভয় তীতে বসবাসরত শতশত আদিবাসী পরিবারের বসতভিটা হুমকির মুখে পড়েছে। এরইমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি ও গাছপালা নষ্ট হয়েছে ফসলি জমি। বালি ও পলিমাটি পড়ে একরের পর একর ফসলি জমি পতিত জমিতে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের দরপত্র অনুযায়ী ৩ মার্চ ২১ খ্রিষ্টাব্দ অনুযায়ী ইজারাকৃত স্থান উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের ওমরগাও হাসান নোয়াগাও এবং বিশাউতি মৌজায় ৩৫ দশমিক ১৫ একর। নির্ধারিত মৌজায় বালু পাথর উত্তোলন না করে মহাদেও নদীর সন্ন্যাসী পাড়া ও চীকনটুপ মৌজা হতে অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে ।
অবৈধভাবে বালি ও পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় নেতা র্লোরল নংমিন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাদিউল।
স্থানীয়দের অভিযোগ অবৈধভাবে বালি ও পাথর উত্তোলনের কারণে এই পরিস্থিতে বালু পাথর বহনকারী ভারীযান চলাচলের কারণে বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সংযুত একমাত্র রাস্তাটি স্থানীয় এলাবাসীর চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বালু ও পাথর যদি ক্রমাগত উত্তোলন চলতে থাকে তাহলে তিনটি মৌজার ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের শত শত ঘর বাড়ি ফসলি জমি গাছপালা বরুয়াকোনা ক্যাথলিক ধর্মপল্লী অধীনে পাতলাবান গ্রামের গীর্জাঘর ও বরুয়াকোনা বাজারসহ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সারাবাংলা/একে