সোস্যাল জায়ান্ট ফেসবুকের নাম বদলে ফেলার গুঞ্জন ছিল আগেরই। সেই গুঞ্জন সত্য হলো। গোটা বিশ্বে বহুমাত্রিক প্রভাব বিস্তারকারী এই টেক কোম্পানি নতুন৷ নাম নিয়েছে ‘মেটা’।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ফেসবুকের বার্ষিক সম্মেলন ‘কানেক্ট কনফারেন্স’ মার্ক জাকারবার্গ নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে প্রাধান্য দিতেই নতুন এই ব্র্যান্ড নাম নিয়েছেন। ‘মেটাভার্স’ নামেই তারা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সেই প্ল্যাটফর্মে এখন থেকে আরও জোর দিয়ে কাজ করবেন।
এই বদলের ফলে ফেসবুকসহ এর অন্যান্য সেবার নাম অবশ্য বদলে যাবে না। ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারের মতো সেবার নাম আগের মতোই থাকবে। ‘মেটা’ হবে মূলত এর প্যারেন্ট কোম্পানি। ছয় বছর আগে গুগল যেভাবে মাদার কোম্পানি অ্যালফাবেট তৈরি করেছিল, ফেসবুকের নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও একই মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।
বার্ষিক সম্মেলনে জাকারবার্গ বলেন, আমরা এমন একটি কোম্পানি, যারা মানুষের সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটাতে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে থাকি। আমরা একসঙ্গে কাজ করে চূড়ান্তভাবে মানুষকেই প্রযুক্তির কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারি। আর এর মাধ্যমে আমরা একযোগে আরও বৃহত্তর অর্থনীতি গড়ে তোলার দ্বারও উন্মোচন করতে পারি।
জাকারবার্গ বলেন, আমরা এখন যা কিছু করছি, নতুন এই নাম (মেটা) তার প্রতিফলন নয়৷ এখনো পর্যন্ত এটি একটি পণ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা একটি মেটাভার্স কোম্পানি গড়ে তুলতে সক্ষম হব।
মেটাভার্স গড়তে ১০ হাজার কর্মী নিয়োগ দেবে ফেসবুক
সপ্তাহখানেক আগে প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট দ্য ভার্জ এক খবরে জানিয়েছিল, ফেসবুকের বার্ষিক সম্মেলন ‘কানেক্ট কনফারেন্স’ থেকে না বদলের ঘোষণা আসতে পারে। ওই সময় ফেসবুকের একটি সূত্র দ্য ভার্জকে এ তথ্য জানালেও আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুকের কেউ সে তথ্য স্বীকার করেনি। তবে বৃহস্পতিবারের সম্মেলনে ভার্জের খবরেরই সত্যতা মিললো। ভার্জের সেই প্রতিবেদনে অবশ্য নাম হিসেবে ‘হরাইজন (Horizon)’-ও আলোচনায় ছিল।
এর কয়েকদিন আগেই মেটাভার্সের ধারণা নিয়ে বেশ বড়সড় এক বিবৃতি দিয়েছে ফেসবুক। তাতে বলছে, ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে তারা মেটাভার্স গড়তে কাজ করবে। অগমেন্টেড রিয়েলিটি সমর্থিত চশমার মতো হার্ডওয়্যার তেরি করবে তারা। আর এর মাধ্যমে ফেসবুক রীতিমতো স্মার্টফোনের বিকল্প নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে। আর গত জুলাইয়েই জাকারবার্গ জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েক বছরেই তাদের সোস্যাল মিডিয়া কোম্পানি থেকে মেটাভার্স কোম্পানি হিসেবে রূপান্তর হতে দেখবেন সবাই।
মেটাভার্সসহ ফেসবুকের নতুন এই ব্র্যান্ডিংয়ের আলোচনা এমন একটি সময়ে এসে জোরালো হয়েছে যখন ফেসবুক নিজেই নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর চাপের মুখে রয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির আরেক সেবা ইনস্টাগ্রামে শিশুদের জন্য আলাদা সংস্করণের ধারণাটিও ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে।