মাঝ পথ থেকে ফিরে গেছে প্রত্যয়, এবার যাচ্ছে রুস্তম
২৯ অক্টোবর ২০২১ ১৫:১৫
মানিকগঞ্জ: পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যাওয়ার তিন দিন পরও আমানত শাহ ফেরি উদ্ধারের কাজ প্রকৃত অর্থে শুরু হয়নি। তিন দিন ধরে বলা হচ্ছিল, উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় গিয়ে ফেরিটি উদ্ধার করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাঝপথ থেকেই প্রত্যয়কে প্রত্যাহার করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এবার আমানত শাহ ফেরিটি উদ্ধার করতে রওনা দিয়েছে রুস্তম।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে এসব তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক। শুধু তাই নয়, সরকারি প্রচেষ্টায় সম্ভব না হলে বেসরকারি উদ্ধারযান এনেও ফেরিটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হতে পারে বলে ভাবছে বিআইডাব্লিউটিএ ও বিআইডাব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকে পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো চলছে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় এই অভিযান শুরু হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো যানবাহন উদ্ধার করা যায়নি।
আরও পড়ুন-
- ফেরি ডুবে গেছে পাটুরিয়ায়
- ৪২ বছরের ফেরি আমানত শাহ ছিল ফিটনেসবিহীন
- ফেরি ডুবে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন
সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের পরিবর্তে শিমুলিয়া থেকে রুস্তম নামের আরেকটি জাহাজ আসবে। সেটি সন্ধ্যা নাগাদ পৌঁছাতে পারে পাটুরিয়া ঘাটে।
কমোডর গোলাম সাদিক আরও বলেন, এরই মধ্যে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া ৯টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি যেসব যানবাহন ফেরির ভেতরে রয়েছে, সেগুলোকে শনাক্ত করা কঠিন কাজ। তবে আমাদের তথ্য বলছে, ফেরির ভেতরে আটকে রয়েছে আরও পাঁচটি যানবাহন। আশা করছি সেগুলো দ্রুতই উদ্ধার করা হবে। সেগুলো উদ্ধারের পর ফেরি তোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিআইডাব্লিউটিএ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়কে এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্ত এখানে জায়গার যে স্বল্পতা রয়েছে, তাতে এত বড় জাহাজের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আপাতত ফেরিতে থাকা যানবাহবাহনগুলো উদ্ধারে হামজার সঙ্গে যোগ দেবে আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। আটকে পড়া যানবাহনগুলো উদ্ধারের পর ফেরি উদ্ধারের বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, গত বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাটে ডুবে যায় শাহ আমানত নামে একটি ফেরি। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে ফেরিটি পাটুরিয়া পৌঁছায়। ১৭টি ট্রাকসহ বেশকিছু যাত্রী ছিলেন ওই ফেরিতে। দুই-তিনটি ট্রাক ফেরি থেকে নেমে যাওয়ার পরপরেই সেটি কাঁৎ হয়ে ডুবে যেতে শুরু করে।
এ ঘটনায় ওই দিনই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) সুলতান আব্দুল হামিদ কমিটির আহ্বায়ক ও বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (কারিগরি) মো. রাশেদুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে নৌপরিবহন সচিবের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, রো রো ফেরি আমানত শাহ ১৯৭৯ সালে আরিচা ফেরি সেক্টরে যুক্ত হয়। বয়সের ভারে ন্যুব্জ ফেরিটিকে প্রায়ই মেরামতের জন্য নেওয়া হতো নারাণগঞ্জের ডকইয়ার্ডে। ফিটনেস না থাকায় পদ্মার তীব্র স্রোতের বিপরীতে চলতে হিমশিম খেত। চার মাস আগে নারাণগঞ্জ থেকে বড় ধরনের মেরামতের পর একে পাটুরিয়া ফেরি সেক্টরে নিয়ে আসা হয়। সম্প্রতি এর তলদেশে একটি ছিদ্র হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।
সারাবাংলা/টিআর
আমানত শাহ ফেরি উদ্ধার তৎপরতা উদ্ধারকাজ উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা কমোডর গোলাম সাদিক বিআইডব্লিউটিএ বিআইডব্লিউটিসি