নকল ভুট্টা বীজে বাজার সয়লাব, মাঠে নেই কৃষি বিভাগ
৩০ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৩৬
লালমনিরহাট: তিস্তা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাটের প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্টা চাষাবাদের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বন্যা পরবর্তী সময় এ জেলার কৃষকরা ভুট্টার বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে। যে কারণে বাজারে ভুট্টা বীজের প্রচুর চাহিদা দেখা গেছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়িরা নামীদামি বীজ কোম্পানির নাম ব্যবহার করে বাজারে নিম্নমানের ভুট্টা বীজ বিক্রি করছে। ওই সব বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারিত হলেও অনুমোদনহীন বীজ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে দেখা মিলছে না কৃষি বিভাগের।
জানা গেছে, প্রায় ১ মাস আগে কৃষকেরা জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী চর অঞ্চলের উঁচু জমিতে কৃষকরা এবার আগাম ভুট্টা বীজ রোপণ করেন। কিন্তু মাসের শেষ সপ্তাহে হঠাৎ বন্যায় জেলার সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে আবারও নতুন করে জমিতে ভুট্টা বীজ রোপণ করতে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে বাজারে তুলনামূলক এবার ভুট্টা বীজের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাজারে নিম্নমানের অনুমোদনহীন ভুট্টা বীজ বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা যায়, গত বছর এ অঞ্চলে বিজয় ৭১ ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছিল। তাই রাফিদ সিডস-এর মাধ্যমে ন্যাচারাল সিডস কোম্পানির ‘বিজয়-৭১’ ভুট্টার বীজ এ অঞ্চলে কৃষকদের কাছে এবার জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা ‘বিজয় ৭১’ নামে অন্য কোম্পানির নামে বীজ প্যাকেটজাত করে বাজারে কম দামে বিক্রি করছে। অনেক কৃষক ‘বিজয় ৭১’ ভেবে অনুমোদনহীন ভুট্টা বীজ কিনছেন।
ন্যাচারাল সিডস কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার নুরুজ্জামান হোসেন বলেন, ‘এ অঞ্চলে কৃষকদের মাঝে রাফিদ সিডস আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ন্যাচারাল সিডস কোম্পানির বিজয় ৭১ ভুট্টা বীজের ব্যাপক চাহিদা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রত্না বীজ ভাণ্ডার নামে একটি বিজ কোম্পানি বিজয় ৭১ ভুট্টা নামে অনুমোদনহীন বীজ বাজারে বিক্রি করছেন। এতে কৃষকরা প্রতারিত হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগও করেছি।’
লালমনিরহাটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, হাটবাজারে বিভিন্ন নামে অনুমোদনহীন কোম্পানির ব্যানারে নিম্মমানের ভুট্টা বীজ বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট দেখতে সুন্দর ও দামে সস্তা হওয়ায় কৃষকরা ওই সব বীজ কিনে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি এবারে ভুট্টা উৎপাদনে লক্ষমাত্রা ব্যহত হওয়ার আশংকাও রয়েছে। ওই সব নিম্নমানের বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারতি হলেও নামসর্বস্ব অনুমোদনহীন বীজ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে দেখা মিলছে না কৃষি বিভাগের।’
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, ‘ভেজাল ও অনুমোদনহীন বীজ বিক্রি আইনগত অপরাধ। ভেজাল বীজ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও