।।স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: প্রতিবছরের মতো ৭ এপ্রিল (শনিবার) পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা: সবার জন্য সর্বত্র।’ প্রতিবছরই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যাকে চিহ্নিত করে সে বিষয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি, সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সকলের সমর্থন অর্জনই দিবসটি পালনের মূল উদ্দেশ্য।
দিবসটি উপলক্ষে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা: সবার জন্য, সর্বত্র’- এ শ্লোগানটি নিয়ে এমন একটি সময় এ দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই।
পৃথিবীর ৮০ কোটি মানুষ তাদের পরিবারের চিকিৎসাসেবার মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশ খরচ নিজের পকেট থেকে বহন করে। যার ফলে বছরে প্রায় ১০ কোটি মানুষ অতি দরিদ্র হয়ে পরছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন করতে হলে ২০২৩ সালের মধ্যে পৃথিবীর আরও ১০০ কোটি মানুষকে অতি প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং চিকিৎসাসেবার ব্যয় বহন করতে গিয়ে বছরে যে প্রায় ১০ কোটি মানুষ অতি দরিদ্র হয়ে পরছে তার সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহেদ মালিক বলেছেন, দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, নারী ও শিশুদের জন্য উন্নততর ও সহজলভ্য মানসম্মত সেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশে একটি কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য সেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
মাতৃ মৃত্যুহার, শিশু মৃত্যুহার, সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধির বিস্তার, সার্বিক প্রজনন হার ও অনাকাঙ্ক্ষিত প্রজনন হার হ্রাসকরণ এবং নারী ও পুরুষের গড় আয়ু, প্রথম সন্তান জন্মের সময় মায়ের বয়স, পুষ্টির মান ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি সরকারের মূল উদ্দেশ্য।
এছাড়া জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনও যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বর্তমানে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের মেয়াদে ১৩ হাজার ডাক্তার, ১৫ হাজার নার্স এবং ১৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ বছরেই নতুন ১০ হাজার চিকিৎসক, ৫ হাজার নার্স এবং ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, বর্তমানে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি এক লাখে ১৭৬ জন যা ২০০০ সালে ছিল ৩৯৯ জন। প্রতি ১০০০ জনে নবজাতকের মৃত্যুর হার ২০০০ সালে ছিল ৪২ দশমিক ৬, যা ২০১৫ সালে কমে হয় ২৩ দশমিক ৩।
একইসঙ্গে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে চিকিৎসকদেরকে গ্রামে থেকে চিকিৎসা প্রদানে উৎসাহিত করতে সরকার নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছে।
সারাবাংলা/জেএ/টিএম