ঢাকা: আসামির মোট সাজা থেকে হাজতবাসের সময় বাদ যাবে বলে মতামত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আর এটি সব মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। অর্থাৎ আসামি যেদিন গ্রেফতার হবেন সেদিন থেকে সাজার রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত যতদিন কারাগারে থাকবেন (হাজতবাস), তা মোট সাজা থেকে বাদ যাবে।
সোমবার (১ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ মতামত দেন। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজি প্রিজনকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আপিল বিভাগ।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী গোলাম আব্বাস চৌধুরী বলেন, ‘নাটোরের জোড়া খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিচারিক আদালত ইউনুছ আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। পরে উচ্চ আদালতে এসে ইউনুস আলীর দণ্ড কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তিনি দীর্ঘদিন হাজতবাসের করেছেন। আমরা এই তথ্য উপস্থাপন করলে হাজতবাসের সময়কাল মোট সাজাভোগ থেকে বাদ দেওয়ায় নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এটা সব মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারা মহাপরিদর্শক সহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ বলেন, ‘ইউনুছ আলীকে নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ইউনুছ আলীর আইনজীবী আপিল বিভাগকে জানান, ইতোমধ্যে ইউনুছ আলী ২৬ বছর হাজত খেটেছেন। একটা কারণে প্রচলিত সিআরপিসির ৩৫ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, বিচারকালীন আসামি যতদিন হাজতবাস করবে, হাজতবাসের এ সময় মূল সাজা থেকে বাদ যাবে। এক্ষেত্রে ইউনুছ আলীর রায়ে ৩৫ (ক) ধারা উল্লেখ করা ছিল না। পরে উচ্চ আদালতে আতাউর রহমান মৃধার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩৫ (ক) ধারার সুযোগটা আসামিরা পাবেন।’
এ বিষয়ে আপিল বিভাগ আজ বলেন, হাজতবাস কারাদণ্ড ভোগের সময়কাল থেকে বাদ যাবে। আসামি ইউনুছ আলীর হাজতকালীন ও কারাদণ্ড ভোগের সময় যোগ করে যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ শেষ হয়ে যায়, তাহলে তিনি মুক্তি পাবেন।