ঢাকা চেম্বারের সম্মেলন, ৯ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ আশ্বাস
১ নভেম্বর ২০২১ ১৯:০৯
ঢাকা: দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা ও ভারত। এই পাঁচটি দেশ বাংলাদেশের অবকাঠমো, ওষুধ, বেবি বোটল, ছাতা, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তিখাতে খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া অন্যান্য দেশেও বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্র দেখছে। সবমিলিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১১৬ কোটি (১.১৬ বিলিয়ন ডলার) বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে। যা বাংলাদেশি টাকায় ৯ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১’ থেকে এ আশ্বাস পাওয়া গেছে। সোমবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলের ডিসিসিআই কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক এই বাণিজ্য সম্মেলনের আউটকাম বিষয়ে জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২১’ চলাকালীন সময়ে আয়োজিত বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সেশনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি ৩৬৯টি বিটুবিতে অংশ নেয়, যেখানে ১.১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ সম্ভাবনার আশ্বাস এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘১৩টি দেশের ২০টি কোম্পানি যৌথ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ হতে ২৬টি পণ্য আমদানির বিষয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে।’
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘অবকাঠমো, ওষুধ, বেবি বোতল, ছাতা, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তথ্য-প্রযুক্তিখাতে পাঁচটি দেশের (চীন, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা ও ভারত) উদ্যোক্তারা সরাসরি বিনিয়োগের বিষয়ে নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জ্বালানি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডেইরি প্রডাক্টস, চামড়া, তৈরি পোশাক, এফএমসিজি, পাট, অটোমোবাইল প্রভৃতি খাতেও বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।’
রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘এ সম্মেলন উপলক্ষে বিষয়ভিত্তিক ছয়টি ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারী আলোচকরা ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নীতিমালার সংষ্কার, সহায়ক নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সহায়তা প্রদান, এফটিও এবং পিটিএ স্বাক্ষর, কুটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার প্রভৃতি বিষয়ের ওপর জোর দেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আরও বলেন, ‘আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া-প্যাসিফিক প্রভৃতি অঞ্চল থেকে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আকর্ষনে সরকার ও বেসরকারিখাতের যৌথ প্রয়াসেরই প্রতিফলন। এর মাধ্যমে কোভিড মহামারি সময়েও বাংলাদেশের প্রস্তুতি ও সক্ষমতার বিষয়টি সারা বিশ্বের নিকট তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তরণে পরবর্তীতে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আমাদেরকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। তবে এফটিএ স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে উভয় দেশের শুল্ক কাঠামো পুনঃবিন্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে