বানরের দেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল বিএমআরসিতে
২ নভেম্বর ২০২১ ০৩:১৬
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয় গ্লোব বায়োটেক। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ভ্যাকসিনটির নাম ‘বঙ্গভ্যাক্স’ বলে জানানো হয়। ২২ জুন বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) পক্ষ থেকে মানবদেহে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এর আগে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা বা অ্যানিম্যাল ট্রায়াল পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে বলা হয়।
বিএমআরসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী ১ আগস্ট থেকে গ্লোব বায়োটেক বানরের দেহে পরীক্ষা শুরু করে। এই পরীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ শেষ হয় ২১ অক্টোবর। এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল বিএমআরসিতে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গ্লোব বায়োটেক।
সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি বিভাগের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।
ভ্যাকসিনের অ্যানিম্যাল ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে দাবি করে ড. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বানরের দেহে ট্রায়ালে করোনার কতটি ভ্যারিয়েন্টে বঙ্গভ্যাক্স কাজ করে, তা দেখা হয়েছে। ট্রায়ালে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত করোনার যতগুলো ভ্যারিয়েন্ট এসেছে, তার সব কটিতেই বঙ্গভ্যাক্স শতভাগ কার্যকর। আমরা আশা করছি বিএমআরসি’র অনুমোদন পেলে চলতি মাসেই মানবদেহে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করতে পারবো।
তিনি বলেন, সোমবার দুপুরে আমরা বিএমআরসিতে সবকিছু জমা দিয়েছি। একইসঙ্গে বিএমআরসির তৃতীয় চিঠির সব প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিএমআরসির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পূর্ব শর্তসহ সব পর্যবেক্ষণের যথাযথ উত্তর দেওয়া শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বানর ও মানুষের মধ্যে জিনগত বেশ মিল রয়েছে। বানরে বঙ্গভ্যাক্স সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। আমরা খুবই আশাবাদী যে, বঙ্গভ্যাক্স মানবদেহেও অনুরূপভাবে কাজ করবে। যদি বিএমআরসি দ্রুত নৈতিক অনুমতি দিয়ে দেয় তাহলে আমরা ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে নভেম্বরের মধ্যেই মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করতে পারবো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২ জুলাই দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয় গ্লোব বায়োটেক। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ৮ মার্চ তারা এই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন।
৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেকের পক্ষ থেকে সফলভাবে প্রাণীদেহে ট্রায়াল সম্পন্ন করার দাবি করা হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি খরগোশের ওপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সফল হয়েছেন জানিয়ে গ্লোব বায়োটেক তাদের উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রটোকল জমা দেয় বিএমআরসিতে।
এরপর বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী সংশোধিত প্রটোকল জমা দেওয়া হয় ১৭ ফেব্রুয়ারি। পরবর্তীতে ২২ জুন বিএমআরসি মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়, যদিও এর আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা করার শর্ত দেওয়া হয়। গত ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি বানরের দেহে পরীক্ষা শুরু করে, যা শেষ হয় ২১ অক্টোবর।
সারাবাংলা/এসবি