হেলে আছে বৈদ্যুতিক পোল, আতঙ্কে কৃষকরা
৩ নভেম্বর ২০২১ ০৮:২৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: দীর্ঘ দিনের মরচে ধরা বৈদ্যুতিক পোল। সেটিও কাঁৎ হয়ে ঝুলে আছে এক দিকে। একটি-দু’টি নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর-রহনপুর সড়কের পাশে মরিচাডাঙ্গা এলাকায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক পোলের সংখ্যা ২০টিরও বেশি। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক পোল ও তারের নিচে রয়েছে কৃষি জমি, পুকুর, রাস্তা ও বাগান। এতে আতঙ্কে রয়েছেন কয়েকশ বিঘা ফসলি জমির কৃষকরা। তারা বলছেন, যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
মরিচাডাঙ্গা এলাকায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা বৈদ্যুতিক পোলগুলো নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো)। ধান, মাসকালাই, আমবাগান, বেগুন ও পেয়ারা চাষের জমির ওপর দিয়ে ১১ কেভি ভোল্টের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আছে। মনে ভয়-আতঙ্ক নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। দীর্ঘ দিনের পুরনো মরচে ধরা পোল সরিয়ে নতুন সংযোগ স্থাপনের দাবি তাদের।
গোমস্তাপুর সদর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে কৃষক এবাদুর রহমান। মরিচাডাঙ্গায় বেগুনের জমি রয়েছে তার। সোমবার (১ নভেম্বর) জমিতে নিড়ানির কাজ করছিলেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, বৈদ্যুতিক তারগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এগুলোতে মরচে ধরে গেছে। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণও করা হয় না। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবে পড়ে থাকলেও কোনো সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না। কয়েকটি পোল এমনভাবে পশ্চিম দিকে হেলে আছে, যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

হেলে পড়েছে বৈদ্যুতিক পোল, ছবি: সারাবাংলা
পাশের পেয়ারা বাগানের কর্মরত শ্রমিক আমিন বলেন, দুই দিন হলো এখানে কাজ করছি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সবসময় মাথার ওপর থাকা পোল ও তারের দিকে তাকাতে হচ্ছে। কখন কী বিপদ হয়ে যায়, কে জানে!
স্থানীয়রা জানালেন, প্রায় ২০টি পোল এভাবেই হেলে আছে। টানা ও তারগুলো আর তেমন মজবুত নেই। এর মধ্যে তিন-চারটি পোল একেবারে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় গরুর রাখাল কালাম বলেন, পোলগুলো ও তারের নিচে গরু চরাতে ভয় লাগে। গরু যদি পোলে ধাক্কা দেয় বা স্পর্শ করে, যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কারণ গরুর তো আর বোঝার কষমতা নেই যে পোলগুলো নড়বড়ে হয়ে আছে! তাই এই এলাকায় গরু চড়াতে এলে অনেক কিছু ভাবতে হয়।

পুকুরে হেলে পড়েছে বৈদ্যুতিক পোল, ছবি: সারাবাংলা
জননিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পোলগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানালেন ওই এলাকার জমির মালিক আতাউর রহমানের। তিনি বলেন, নেসকোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তাদের অবহেলার কারণে অনেক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এমনভাবে পোলগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, তবু তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানতে চাইলে গোমস্তাপুরে নেসকো’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল হান্নান সারাবাংলাকে বলেন, মরিচাডাঙ্গা লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে নতুন সংযোগ দেওয়া হবে। দুয়েক মাসের মধ্যেই পুরনো পোলগুলো তুলে নিয়ে নতুন সংযোগ স্থাপনের জন্য নতুন পোল বসানো হবে।
সারাবাংলা/টিআর