Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনায় দুর্ভোগ বেড়েছে প্রতিবন্দীদের— বিআইডিএসের গবেষণা

স্টাফ করেসপনডেন্ট
৩ নভেম্বর ২০২১ ২১:২০

ঢাকা: করোনা মহামারির মতো পরিস্থিতি দুর্ভোগ বেড়েছে প্রতিবন্দীদের। যেটি সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। বুধবার (৩ নভেম্বর) ‘হেলথকেয়ার ফর পারসন উইথ ডিজএ্যাবলিটি ইন দ্য টাইম অব করোনা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে। ওয়েবিনারে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিরয়র রিসার্স ফেলো ড.আনোয়ারা বেগম। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএস’র মহাপরিচালক ড.বিনায়ক সেন।

বিজ্ঞাপন

ওয়েবিনারে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারি বাংলাদেশের মতো দেশসহ বিশ্বের সব দেশের জন্য বড় বিপর্যয়। এ বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশ্বের দেশগুলোর আশানুরূপ প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায়নি। করোনা আক্রান্ত রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এ দুর্ভোগের মাত্রা ও তীব্রতা ব্যাপক হয়ে থাকে। যেসব রোগীর জটিলতা বেশি তাদের চিকিৎসা ব্যয়ও বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া সুস্থ মানুষদের চেয়ে প্রতিবন্ধী মানুষদের বিশেষ করে নারী প্রতিবন্ধীদের ভোগান্তি কয়েকগুণ বেশি হয়ে থাকে।

বিজ্ঞাপন

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ কি সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রতিবন্দীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে গবেষণায় অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৭ শতাংশ বলেছেন হ্যাঁ। আর ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ বলেছেন হতে পারে। এছাড়া করোনাকালীন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক বা নার্সের মাধ্যমে প্রতিবন্দী ব্যক্তিদের পরিচালনা করা হতো কি না? এমন প্রশ্নর জবাবে ৮০ শতাংশই বলেছেন না, ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ বলেছেন জানি না এবং বাকি৭ শতাংশের কাছাকাছি ব্যক্তি বলেছেন হ্যাঁ। শিক্ষার অভাব ও আয় কমে যাওয়ার কারণে প্রতিবন্দী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সেবা ঝুঁকিপুর্ণ কি না?এর জবাবে ৯৪ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছিলেন হ্যাঁ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনা মহামারিতে সাধারণ মানুষের চেয়ে প্রতিবন্ধী মানুষেরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে। প্রতিবন্ধী নারী, পুরুষ ও শিশুদের একদিকে যেমন সামাজিক নিন্দা, অপবাদ, ঘৃণা, লজ্জা, নিগ্রহ অর্থাৎ সামাজিক কুসংস্কারের শিকার হতে হয়, অন্যদিকে তেমনি আর্থিক ও সামাজিকভাবে অন্যদের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। এছাড়া তাদের জন্য সেবাদানকারী, সাহায্যকারী, পরিচর্যাকারী ও দোভাষীর প্রয়োজন হয়। তাই তাদের পক্ষে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হয় না। যেসব রোগী হুইলচেয়ার ব্যবহার করে বা চলাচলের জন্য অন্য কারো সাহায্য নেয় তাদের সেবা ও পরিচর্যার জন্য সম্পদ ও জনবলের পাশাপাশি কাঠামোগত বিন্যাসের (বিশেষ করে অপ্রতুল নার্সিং ও পরিচর্যার ক্ষেত্রে) প্রয়োজন হয়। কিন্তু যথাযথ যানবাহন পরিষেবার অভাব, বড় শহরগুলোতে বিশেষায়িত ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার আধিক্য, অসহায় ও  উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের বিশেষ প্রয়োজন বিষয়ে নার্সদের মধ্যে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের অভাব ইত্যাদি একত্রে তাদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে।

গবেষণার মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, মহামারিকালে প্রতিবন্ধী মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা প্রাপ্তিতে বৈষম্য ও অসমতার পাশাপাশি বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলোর মাত্রা ও তীব্রতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা। নার্সদের সেবা দক্ষতা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও নার্সদের প্রস্তুতি এবং রোগীদের অভিজ্ঞতা ও প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্মুখ সারিতে থাকা হাসপাতালগুলো ও সেগুলোতে কর্মরত নার্সদের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী মানুষদের নিবিড় সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

বিআইডিএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর