আইন মেনেই ২ আসামির ফাঁসি কার্যকর: অ্যাটর্নি জেনারেল
৪ নভেম্বর ২০২১ ১৭:১৮
ঢাকা: সবধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেই চুয়াডাঙ্গার মনোয়ার হত্যা মামলার দুই আসামি মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এ এম আমিন উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, আসামি মোকিম ও ঝড়ু জেলখানা থেকে যে আপিল করেছিলেন সেটি ছিল জেল আপিল। তিনজন বিচারপতি শুনানি করে সে আপিল ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর রায়ের মাধ্যমে তা খারিজ করে দেন। কিন্তু তিনি আরও একটি আপিল (নিয়মিত) দায়ের করেন যেটি গতকাল লিস্টে ছিল। সংবিধান সংশোধনের ফলে লিভ টু আপিল শুনানি হয় না, সরাসরি আপিল শুনানি হয়। যে কারণে ওই আপিলটি কার্যতালিকায় ছিল। তবে উনার আইনজীবীর উচিত ছিল দুটি আপিল একসঙ্গে শুনানি করা বা আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে আসা। যেহেতু তারা দৃষ্টিতে আনেননি, তাই তাদের যে জেল আপিল ছিল তা সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্টে শুনানি হয়ে ডিসমিসড হলো। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলেন, সেটিও ডিসমিসড হলো। আপিল এবং প্রাণ ভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবে দণ্ড কার্যকর করা হলো।’
‘যেহেতু এই আপিলটি আলাদাভাবে করা হয়েছে, একসঙ্গে ট্যাগ করা হয়নি, এ কারণে রয়ে গেছে। বিচার তো হয়ে গেছে। আদালতে তাদের আইনজীবীরা শুনানি করেছেন, আদালত সবকিছু শুনে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন’— বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
বিচার শেষ হওয়ার পর আপিল কার্যতালিকায় আসা প্রসঙ্গে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক কিছুতেই এখনও অ্যানালগ সিস্টেম। এখনও পুরো বিচার ব্যবস্থা ডিজিটাল হয়নি যে, একটা দিলেই সব চলে আসবে। আমি মনে করি, আইনজীবীদের দায়িত্ব হচ্ছে যে, এক আপিলের সঙ্গে আরেকটি আপিল আছে- সেটা আদালতের নজরে নিয়ে আসা। আমরা যখন রিভিউ শুনানি করি তখন প্রতিটির ভেতর দেখি, সমস্যার সম্মুখীন হই। দেখা যাচ্ছে যে, আপিল আসে না। আদালতে বলি সময় দেন সাত দিন, খুঁজে বের করতে হয়। আশা করি, এখন যেহেতু সব ডিজিটালাইজড হয়ে যাচ্ছে, সেহেতু ভবিষ্যতে হয়তো এই সমস্যাগুলো থাকবে না।’
শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সব গুণাগুণ বিচার করে আপিলে রায় দিয়েছেন। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
আপিল নিষ্পত্তির আগেই চুয়াডাঙ্গার মনোয়ার হত্যা মামলার দুই আসামি মোকিম ও ঝড়ুর ফাঁসি কার্যকরের অভিযোগ করেন তাদের আইনজীবীরা। আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির বলেছিলেন, ‘বিচারপ্রার্থীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়েছি, কনডেম প্রিজনার মকিম ও ঝড়ুর মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে। মূলত মোকিম ও ঝড়ুর পরিবার খুবই দরিদ্র। তাই তাদের পক্ষে পরিবারের সদস্যরা সেভাবে মামলার বিস্তারিত খোঁজ নিতে পারেননি।’
এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সবধরনের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ফাঁসি কার্যকরে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম