ঢাকা: বকেয়া পাওনা আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে আন্দোলনে থাকা গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং ইয়ং ওয়ান লিমিটেডের শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে শ্রমিকদের একটি প্রতিনিধি দল এই স্মারকলিপি জমা দিয়েছে।
নজরুল নামের একজন শ্রমিক সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কারাখানার শ্রমিকরা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছে। শ্রমিকদের ৪ থেকে ১১ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও আইনানুগ পাওনা পরিশোধের দাবিতে স্মারকলিপি দিতে সমবেত ভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে শ্রমিকদের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়। তার মধ্যে ৩ জনের একটি দল স্মারকলিপি জমা দেন।
শ্রমিকরা জানান, তারা গাজীপুরে অবস্থিত স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং ইয়ং ওয়ান লিমিটেড কারখানার শ্রমিক। আমরা কারখানা ৪২৪৩ জন শ্রমিক কর্মচারী প্রাপ্য মজুরি বঞ্চিত হয়ে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বর্তমানে নিরুপায় হয়ে গত দশ দিন ধরে ঢাকার শ্রম ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছি।
বকেয়া আদায়ে শ্রম ভবনে স্টাইলক্রাফটের শ্রমিকদের অবস্থান
তারা বলেন, ‘মালিকপক্ষ গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে নানাভাবে বেতন ভাতা এবং ঈদ বোনাস না দিয়ে আমাদের বঞ্চিত করেছে। বর্তমানে কারখানার শ্রমিকদের ছয় মাসের এবং কর্মচারীদের নয় মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। উপরন্তু মালিকপক্ষ বে-আইনিভাবে কারখানা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিপুল অংকের আইনগত পাওনা পরিশোধ করছে না।’
তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বিগত ৬ মাসের বেশি সময় ধরে আমরা বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি দফতর এবং মালিক সমিতির দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমাদের সংকটের সুরাহা পাইনি। এ সময়কালে রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে কয়েকবার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। কিন্তু মালিক কখনই কোনো চুক্তি প্রতিপালন করেনি।’
তাদের দাবি, গত ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সম্পাদিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অবিলম্বে বাস্তবায়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধ করতে হবে। একইসঙ্গে বারবার চুক্তি ভঙ্গ করে শ্রমিকদের সীমাহীন হয়রানি করায় মালিক এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।