জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়: মির্জা ফখরুল
৫ নভেম্বর ২০২১ ২০:০৭
ঢাকা: ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পেছনে সরকারের যুক্তি ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির প্রয়াত নেতা ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার কতটা দায়িত্ব জ্ঞানহীন হলে, কতটা জনবিচ্ছিন্ন হলে তারা এই রকম অমানবিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে? একদিকে বাংলাদেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হলো। আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঁচ টাকা কমিয়ে দেওয়া হলো।’
‘যুক্তিটা কী দিয়েছে? আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। আর আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে গিয়েছিল তখন তুমি তেলের দাম বেশি নিয়েছ কেন? তখন তো কম নাও নাই। তখন ওই টাকা চুরি করেছ তোমরা। এখন আবার যেটা করছ তাতে আমাদের পকেট কেটে তোমাদের পকেট ভরাচ্ছে’, বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটা দুঃশাসনের কবলে পড়েছি যে, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক রাত্রে হঠাৎ করেই ১৫ টাকা করে বাড়িয়ে দেওয়া হলো। যেখানে ছিলো ৬৫ টাকা, সেটা করা হলো ৮০ টাকা, যেটা ছিলো ৫৫ টাকা সেটা করা হয়েছে ৭০ টাকা। এলপিজির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বছরে তিন বার, চার বার করে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। বাজারে কোনো কিছু কেনার জো নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।’
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দিয়ে কী করল। আজ থেকে স্ট্রাইক হচ্ছে। ট্রাক ও বাস বন্ধ। কাল থেকে দেখবেন ওই বাস মালিকরা বলবে যে, ভাড়া বাড়াও, ভাড়া না বাড়ালে আমরা গাড়ি চালাতে পারব না। ট্রাকওয়ালা বলবে আমাদের আরও বেশি করে ভাড়া দিতে হবে না হলে আমরা ট্রাক চালাতে পারব না।’
‘অর্থাৎ কাঁচা বাজার, চাল-ডাল-চিনি-তেল-লবণ সমস্ত কিছুর দাম বাড়তে থাকবে। এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধবংস করছে, বাংলাদেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে। এখন তারা মানুষের ভবিষ্যতকে ধবংস করছে’, বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে তো বিরোধীদল মাঠে নাই। তারা তারাই। এখানেও নিজেরা মারামারি করে ৮৭ জন মরেছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা ধবংস করেছে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফুর রহমান, যুবদলের সাইফুল আলম নিবর, মুক্তিযোদ্ধা দলের শহিদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম ও প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
সারাবাংলা/এজেড/এমও