২৪ ঘণ্টায় কিছুই খাননি রাজীব
৭ এপ্রিল ২০১৮ ১৪:৩৩
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: শুক্রবার দুপর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো ধরনের খাবারই খাননি বাস চালকদের নিষ্ঠুরতায় হাত হারানো রাজীব। স্বজন ও চিকিৎসকরা জানান,খাবার মুখে দেওয়ার চেষ্টা করলে বারবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তিনি। আর প্রশ্ন করছেন, ‘খেয়ে আর কি হবে?’
শনিবার (৭ এপ্রিল) রাজীবের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে তার চিকিৎসায় গঠন করা মেডিকেল বোর্ড সদস্যরা ও রাজীবের মামা সারাবাংলার প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ডিএমসিএইচ) নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র সরকার সারাবাংলাকে বলেন, তিনি (রাজীব) এখন শঙ্কা মুক্ত। শনিবার সকালে তাকে দেখে এসেছি। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে সে আর খাচ্ছে না। এ কারণে রাজীবের স্বজনরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। মুখ দিয়ে কোন কিছু না খাওয়ায় তাকে নাক দিয়ে নল পড়ানো হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর নিজেই তা খুলে ফেলেন।
ডা. অসিত চন্দ্র আরও জানান, হয়তো তিনি (রাজীব) জেনে ফেলেছেন যে তার একটা হাত নেই। এই জন্য মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেছেন হয়তো। কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করা হলেই তিনি তা গ্রহণ করছেন না। খেয়ে আর কি হবে এই ধরনের প্রশ্ন করছেন। তার হাতে এখন কোনো রক্তক্ষরণ নেই। সেখানে নিয়মিত ড্রেসিং করা হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার আরও একটি সিটি স্ক্যান করানো হবে।
রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুরের দিকে রাজীব জুস খেয়েছিল। তারপর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় একদিন ধরে কিছুই খায়নি। সম্ভবত সে আঁচ করতে পেরেছে তার একটা হাত নেই। তাকে রাজীব বলে ডাক দিলে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকছে। বলছে ‘আমি কিছুই খাব না। খেয়ে আর কি হবে আমার।’
গত মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) সোনারগাঁও হোটেলের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে স্বজন বাস ও বিআরটিসির বাসের পাল্লাপাল্লিতে সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেনের ডান হাতটি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এসএসআর/এমআইএস/জেডএফ