ধর্মঘটে উচ্চ ভাড়ায় মাইক্রোবাসই ভরসা, বিপাকে যাত্রীরা
৬ নভেম্বর ২০২১ ২০:৪৫
সিরাজগঞ্জ: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন জেলা বাস মালিক ও জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়ন। ফলে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় দূরপাল্লার যানবাহন না থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে এতে এখন দূর-দূরান্তে চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চ ভাড়ায়চালিত মাইক্রোবাস। ২০০টাকার ভাড়া ৫০০টাকা দিয়ে মাইক্রোবাসেই ঢাকার উদ্দেশে সিরাজগঞ্জ ছাড়ছেন যাত্রীরা।
শনিবার (৬ নভেম্বর) হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে কোন দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল না করায় সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বরে শতশত যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় অনেকেই মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল ও পণ্যবাহী ট্রাকে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া দিয়ে তাদের গন্তব্যে যাত্রা করছেন।
শাহজাদপুর থেকে ঢাকাগামী গার্মেন্টস কর্মী রুবেল বলেন, ‘শাহজাদপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়েছি। মোটরসাইকেলে এবং অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত এসেছি। কিন্তু এখানে বাস না পাওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। আজকে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবো কি না সেই শঙ্কায় আছি। আর ৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে মাইক্রোবাসে যাওয়াও আমাদের মতো শ্রমিকদের জন্য কঠিন কাজ।’
শাকিব নামে এক যাত্রী হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় চালভর্তি বস্তার ওপরে বসে বাস না পেয়ে ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় একটি ছোট্ট চাকরি করি। বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম, আজ আবার কর্মস্থলে যাচ্ছি। ভাবলাম চালের অনেক দাম তাই বাড়ি থেকে একবস্তা চাল নিয়ে যাই। কিন্তু এই চালই যেন আরও বোঝা হয়ে গেছে। বাস না পেয়ে বসে আছি কিন্তু মাইক্রোবাসে উচ্চ ভাড়ায় যাওয়ার সুযোগ থাকলেও চালসহ মাইক্রোবাসে যাত্রী নিচ্ছেন না চালকরা। এখন ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাইক্রোবাস চালক বলেন, ‘মাথাপিছু ৫০০ টাকার বিনিময়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রী তুলছি। তবে গতকাল ৬০০টাকা পর্যন্তও নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও যেহেতু মাইক্রোবাসে অতিরিক্ত জায়গা থাকে না তাই ভারী মালামালসহ যাত্রী তোলা হচ্ছে না।’
সিরাজগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আল মাহমুদ বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্যে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ডিজেল প্রতি লিটার ১৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন সেক্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এত দামে জ্বালানি তেল কিনে আগের ভাড়ায় গাড়ি চালানো সম্ভব না।’
সিরাজগঞ্জ জেলা বাস ও পরিবহন মালিক সমিতির নেতারাও বলছেন, ‘তেলের দামের সঙ্গে বাস ভাড়া বৃদ্ধি না করলে মালিকরা গাড়ি চালাবে না। কারণ এতে মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই কঠোর ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সারাবাংলা/টিএস/এমও