৮ মাসে আটক ৪৫১ কেজি সোনা, ব্যাংকে জমা ১২৭
৭ নভেম্বর ২০২১ ১২:২৬
ঢাকা: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকা কাস্টম হাউস সোনার বার ও স্বর্ণালঙ্কার আটক করেছে ৪৫১ কেজি ৫০৯ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ২৭০ কোটি টাকার মতো। এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকে আরও ১২৭ কেজি ৭৪৮ গ্রাম সোনা জমা দিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউস।
রোববার (৭ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ঢাকা কাস্টম হাউস সূত্রে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।
জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা কাস্টম হাউস সোনার বার ও স্বর্ণালঙ্কার আটক করে ৪৬ কেজি ১০৪ গ্রাম। ফেব্রুয়ারিতে আটক করে ৪৯ কেজি ২৬২ গ্রাম। মার্চে আটক করে ৫৫ কেজি ৮৬৬ গ্রাম। এপ্রিলে আটক করে ৬০ কেজি ৫৮৩ গ্রাম। মে মাসে আটক করে ৫০ কেজি ৩০৯ গ্রাম। জুন মাসে আটক করে ৫০ কেজি ৪৭৯ গ্রাম। জুলাই মাসে আটক করে ৮০ কেজি ৩৭ গ্রাম আর আগস্ট মাসে আটক করে ৫৮ কেজি ৮৬৯ গ্রাম।
অপরদিকে ঢাকা কাস্টমসে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাৎক্ষণিক ঘোষণার (২৩৪ গ্রামের কম) মাধ্যমে খালাসকৃত সোনার বার ও স্বর্ণালঙ্কারের পরিমাণ ১৪৩২ দশমিক ৭০৭ কেজি। ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫২৯ দশমিক ৮৯৩ কেজি। পরে মার্চ মাসে ১৬৩৪ দশমিক ৪৩৩ কেজি। এপ্রিল মাসে ৯৯৬ দশমিক ২৯ কেজি। মে মাসে ১৭২৭দশমিক ৫৩৯ কেজি। জুন মাসে ১৯৪৯ দশমিক ৬২৭ কেজি। জুলাই মাসে ২৩শ কেজি ২০৯ গ্রাম। আর আগস্ট মাসে ২৫৫৮ দশমিক ৫৫ কেজি সোনার বার ও স্বর্ণালংকার খালাস করা হয়।
সাধারণত তাৎক্ষণিক ঘোষণায় বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশ থেকে আসার সময় ২৩৪ গ্রামের নিচে সোনার বার ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসতে পারেন। সেজন্য প্রত্যেক নাগরিক ২৩৪ গ্রামের নিচে যে পরিমাণ সোনা নিয়ে আসবেন সেই পরিমাণ সোনার বিপরীতে সরকারকে ট্যাক্স পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত বিদেশ থেকে আসার সময় কোনো নাগরিক যদি ১ গ্রাম সোনা নিয়ে আসেন তাহলে সেই নাগরিককে ঘোষণা দিতে হয়।
এদিকে ঢাকা কাস্টমস হাউস গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ীখাতে ১২৭ কেজি ৭৪৮ গ্রাম সোনা জমা দিয়েছে। ৫৬টি ভিজিআর’র (ভ্যালুয়েবল গুডস রেজিস্টার) বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার অস্থায়ীখাতে এসব সোনা জমা দেওয়া হয়।
জানা যায়, ঢাকা কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান যোগদান করার পর চোরাচালান রোধে কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন। একইসঙ্গে ঢাকা কাস্টমস হাউসের গুদামে জমা থাকা সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখায় জমা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। সেই উদ্যোগের ফসল হিসেবে গত সপ্তাহে ঢাকা কাস্টমস হাউসের একটি প্রতিনিধি দল ও পুলিশের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখায় ৫টি স্টিলের লকারে লাল কাপড়ে মুড়িয়ে ১২৭ কেজি ৭৪৮ গ্রাম সোনা জমা নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অস্থায়ী ভিত্তিতে ঢাকা কাস্টম চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ৭১৫ কেজি সোনা অস্থায়ীখাতে জমা দেয়। আর স্থায়ীখাতে গত বছরের ৪ অক্টোবর ১০৯ কেজি সোনা স্থায়ীভাবে জমা দেওয়া হয়, যার নিলামের কার্যক্রম চলমান।
সাধারণত অস্থায়ীখাতে জমা দেওয়া কোনো সোনা (মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া) চাইলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফেরত আনতে পারে। আর আটককৃত কোনো সোনার মামলা নিষ্পত্তি হলে সেগুলো রাষ্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়, আর সেটা স্থায়ীখাতে জমা দেওয়া হয়। আর সেই সোনা নিলাম শেষে বিক্রির মাধ্যমে সরকারের রাজস্বখাতে জমা হয়ে যায় অর্থ।
এ বিষয়ে ঢাক কাস্টমস হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধ কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা এবং সরকারের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে রাজস্ব সংগ্রহ করে যাচ্ছি। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকে কিছু সোনা জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকে যেসব সোনা স্থায়ীভাবে জমা দেওয়া আছে,সেগুলোর নিলাম করতেও কাস্টমসের পক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এসজে/এনএস
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঢাকা কাস্টম সোনার বার স্বর্ণালঙ্কার