চৌমুহনীর মন্দিরে হামলা-লুণ্ঠন: গ্রেফতার ৪
৮ নভেম্বর ২০২১ ১৩:৫৩
ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে মন্দিরে হামলা ও লুণ্ঠনের ঘটনায় পূজার সামগ্রীসহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছেন: মো. মনির হোসেন ওরফে রুবেল (২৮), জাকের হোসেন রাব্বি (২০), মো. রিপন (২১) এবং মো. নজরুল ইসলাম সোহাগ (৩৬)।
সোমবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও উসকানিমূলক তথ্য প্রচার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন চৌমুহনী এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দিরে হামলা ও লুটতরাজ চালায়। এ সংক্রান্তে কিছু ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা হয়।
সেই সব মামলায় র্যাব-১১ এর একটি দল ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৭ নভেম্বর রাতে রাজধানীর ডেমরা, নারায়ণগঞ্জের বন্দর এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থেকে চৌমুহনীর মন্দিরে হামলা এবং লুটপাটে জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মন্দিরের লুণ্ঠিত পূজার সামগ্রী ৭টি পিতলের তৈরি প্রতিমা/মুর্তি, ৩টি সিদুঁর কৌটা, ২০টি বাতির কৌটা, দুইটি দ্রুপদী, পাঁচটি পঞ্চবাতির দানি, দুইটি হাত ঘণ্টা, ১০টি স্ট্যান্ডসহ মুছি বাতি, একটি কুলা, পাঁচটি পঞ্চ পাতার পল্লব, এক টাকা মূল্যের ৫৫০ বাংলাদেশি মুদ্রার কয়েন, ১১টি গ্লাস, পাঁচটি বাসন, সাতটি ঘটি, চারটি ইমিটিশনের গলার হার ও দুইটি মালা, ছয়টি ইমিটিশনের হাতের বালা, ছয় জোড়া ইমিটিশনের কানের দুল, একটি ইমিটিশনের চেইন, ১২টি বিভিন্ন রকমের চুল বাঁধার কাঁকড়া, ছয়টি নেইলপলিশ, এক সেট পিতলের অলঙ্কার, দুইটি মঙ্গল সূত্র, একটি আগরবাতি দানি, একটি পিতলের ডাব, একটি ওম, দুইটি কাসন, এক সেট আকমন পাত্র, নগদ ৩০৫ টাকা এবং ৪০টি পিতলের তৈরি বিভিন্ন আইটেমের পূজার কাজে ব্যবহৃত ভাঙ্গা/অসম্পূর্ণ অংশ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও মন্দিরে হামলায় সময় মো. মনির হোসেন রুবেলের পরিহিত গেঞ্জি ও লুঙ্গি এবং হামলায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রুবেল, রাব্বী এবং রিপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে হামলায় অংশগ্রহণ করে।
হামলা পরবর্তী গ্রেফতারকৃত রুরেল, রাব্বী এবং রিপন দুইটি বস্তায় করে মন্দিরের বিভিন্ন পিতলের পূজার সামগ্রীসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। তারা গ্রেফতারকৃত সোহাগের সহযোগিতায় ধাতব আইটেমসমূহ রুপান্তর করে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। মন্দিরে মালামাল লুট করার সময় রুবেলের ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। গ্রেফতারকৃত রুবেল, রাকিব, রিপন এবং সোহাগ বিভিন্ন পেশায় জড়িত। গ্রেফতারকৃত রুবেলের বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় চুরি ও ছিনতাইয়ের একটি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম