Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লুটপাটের সুযোগ দিতে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ নভেম্বর ২০২১ ১৪:৪৯

ঢাকা: জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্যের অধিক হারে মুনাফা লুটপাটের সুযোগ দিতে সরকার মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী একচেটিয়াভাবে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একইসঙ্গে বর্ধিত গণপরিবহন ভাড়া প্রত্যাখ্যান করে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য বাস ও লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে নগরীর সেগুনবাগিচায় শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘যাত্রী স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে মালিক শ্রমিক সরকার মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি’র প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সহনীয় মাত্রায় ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও এই ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিফলন হয়নি।’

বাস ও লঞ্চ মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে সরকার তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়ে দিতে যাত্রী প্রতিনিধি বাদ দিয়ে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। অসহায় বিআরটিএ ও বিআইডাব্লিউটিএর অনেকেই মালিকদের পকেটে ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রীর স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গলাকাটা ভাড়া নির্ধারণের ফলে দেশের নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনসাধারণকে আরও একদফা গভীর সংকটে ঠেলে দিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতে যেভাবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা জুলুম বলা চলে, এখানে সিএনজি গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পর একদফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল। আবার তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ানো হলো এতে যাত্রী সাধারণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্ধিত বাস ভাড়া কার্যকরের আগে এখানে কী পরিমাণ বাস গ্যাসে চলে আর বাস তেলে চলে তার সুরাহা হওয়া দরকার।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণে পুরোনো বাসকে নতুন বাস হিসেবে দেখানো হয়েছে— ‘চালক-হেলপারদের বেতন, বোনাস প্রদানের মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, ২০ বছরের পুরনো বাসেও ব্যাংক লোন দেখানো হয়েছে। এভাবে নানা খাতে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি দেখিয়ে একলাফে ১ দশমিক ৪২ পয়সার ভাড়া ১ দশমিক ৮০ পয়সা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করলে বড় জোর ১ দশমিক ৬০ পয়সা নির্ধারণ করা যেত।’

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় গত একদশকে প্রভাবশালী মালিকদের নিয়ন্ত্রণে আমাদের নৌপথে বেশ কয়েকটি ৩-৪ কোটি টাকা দামের লঞ্চ যাত্রীসেবার বহরে যুক্ত হয়েছে। এ সব লঞ্চের ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রী বহনের সক্ষমতা রয়েছে। এ ধরনের কোটি টাকার লঞ্চ চালাতে লাখ টাকা খরচ হয়। এই লঞ্চের সংখ্যা ২০-৩০টির বেশি না হলেও ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে এ সব বড় লঞ্চের খরচকে ব্যয় বিশ্লেষণে এনে ভাড়া নির্ধারণ করে দেশের লাখ লাখ নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা, ও ছোট লঞ্চ, ট্রলারের ভাড়া বৃদ্ধি করার কারণে যাত্রীর স্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে সাশ্রয়ী নৌপথের ভাড়া ক্রমশ সড়ক পথের দ্বিগুণ হয়েছে। এহেন অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য ভাড়া বাতিল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রীধারণ সক্ষমতার বড় লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং ছোট ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা, ও লঞ্চ, ট্রলার যাদের যাত্রীধারণ সক্ষমতা ১৫০ থেকে ৫০০ জন। পরিচালন ব্যয় কম এ সব নৌ-যানের ভাড়া ১ টাকা ২০ পয়সা করার দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, নিবন্ধিত যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত সংগঠন হিসেবে যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে যাত্রীসাধারণের প্রতিনিধি হিসেবে বাস ও লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে বার্গেনিংয়ের সুযোগ দেওয়া হলে এ ধরনের অবাস্তব একচেটিয়াভাবে ভাড়া বাড়ানো যায় না বলেই বাস-লঞ্চের জনস্বার্থের ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মালিক-সরকার মিলেমিশে রুদ্ধদার বৈঠকের আয়োজন করে। এমন অন্যায় ও জুলুমপূর্ণভাবে বর্ধিত ভাড়া বাতিল করে যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্ময়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য, বাস্তবসম্মত ভাড়া নির্ধারণের জন্য তারা সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।

সারাবাংলা/একে

ডিজেল পরিবহন ভাড়া বাস ভাড়া ব্যয় বিশ্লেষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর