‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন, অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সাজা’
৯ নভেম্বর ২০২১ ১৮:১১
ঢাকা: চার কোটি টাকা ঋণ দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে পৃথক দুই ধারায় মোট ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একটি ধারায় সাত বছর ও অন্য একটি ধারায় চার বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুটি সাজা একত্রে চলমান থাকবে। ফলে তাকে সাত বছর কারা ভোগ করতে হবে। এছাড়াও মামলার অপর ১০ আসামির মধ্যে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মেদ আলী সালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। অপরাধী যত বড় শক্তিশালী হোক না কে, যত বড় ক্ষমতা থাকুক না কেন আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সাজা হবেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির পদে থাকা অবস্থায় উনার (এসকে সিনহা) যে অবস্থান, সেই অবস্থানে থেকে উনি যেটা করেছেন সেটা প্রসিকিউশন থেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছিলাম বলেই আজ তার সাজা হয়েছে।’
আসামি শাহজাহান এবং নিরঞ্জন সাহা খালাস পাওয়ার বিষয়ে মীর আহাম্মেদ আলী সালাম বলেন, ‘তাদের ভিকটিমাইজড করা হয়েছে। এ মামলায় তারা আদালতে এসে স্বীকার করেছেন যে, তারা মামলা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাদের কিছু কাগজে সই করতে হয়েছে। সেই কাগজে সইয়ের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।’
বাবুল চিশতি ও লুৎফুল হকের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম বলেন, ‘আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে ফারমার্স ব্যাংকের যে ঋণ পলিসি আছে তা ভায়োলেন্স হয়েছে। এজন্য আদালত তাদের সাজা দিয়েছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকেও সাজা দিয়েছেন। তিনি তো পলাতক আছেন। তিনি যখন ধরা পড়বেন তখন থেকেই তার সাজা চলবে।’
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী, সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুৎফুল হক, রনজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী শান্ত্রী রায়। এর মধ্যে এ কে এম শামীমকে চার বছর ও বাকিদের তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস পেয়েছেন টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং একই এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা।
এদিকে খালাস প্রাপ্ত দুই আসামি বলেন, আমরা কোনো অপরাধ করিনি। আদালত আমাদের ন্যায় বিচার দিয়েছে। আমরা রায়ে খুশি।
এদিন সকাল ১১ টার দিকে রায় পড় শুরু করেন বিচারক। ১৮২ পৃষ্ঠার এ রায় পড়া শেষ হয় ১টা ১৫ মিনিটে। এর আগে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদক এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত গত ৫ অক্টোবর রায়ের তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু ওইদিন বিচারক অসুস্থ হয়ে ছুটিতে থাকায় তা পিছিয়ে ২১ অক্টোবর ধার্য করা হয়।
সারাবাংলা/এআই/পিটিএম