Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করলে কঠোর পদক্ষেপ’


৭ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:৪৭

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকাঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, দেশের অনেক নামকরা হাসপাতাল ও ফার্মেসিকে জরিমানা করেও ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে শনিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে  আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘ওষুধের ভেজাল মোকাবেলায় আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়েছি। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়ায় আমরা রাজধানীর অনেক নামকরা হাসপাতাল ও ফার্মেসিকে জরিমানাও করেছি। এরপরও হাসপাতালগুলোতে ভেজাল ওষুধ রাখা হচ্ছে।’

নামকরা হাসপাতাল-ফার্মেসিতে ভেজাল ওষুধ কেন রাখা হবে? এমন প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের কত টাকা পয়সা দরকার ? তাদের কি কোনো বিবেক নেই ? বিবেক কি নাড়া দেয় না ?’

এ অবস্থা চলতে থাকলে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

ওষুধ উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থানের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন করছে। বাংলাদেশের ওষুধ আমেরিকা ও  ইউরোপসহ ৫৭টি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

দেশের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে ওষুধের দাম কমিয়ে আনতে দেশীয় উৎপাদনকারীদের প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘অধিক মুনাফার লোভে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী খাবারে ফরমালিন মেশাচ্ছেন। মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই। এসব থামাতে আমাদের আইন করতে হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক বেসরকারি মেডিকেল কলেজে লাইব্রেরি নেই, মানসম্মত ল্যাবরেটরি নেই, ভালো শিক্ষক নেই। তারপরেও তারা কলেজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা এইরকম বেশ কয়েকটি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে তারা কোর্টে গেছে। কিছু নামকরা আইনজীবী অর্থের বিনিময়ে কোর্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পক্ষে রায় নিয়ে কলেজগুলোতে আবারও ভর্তি কার্যক্রম চালু করেছে।’

‘এসব কলেজ থেকে ডাক্তার বের হলে তারা মানুষ মারার ডাক্তার হবে,’ বলেন মোহাম্মদ নাসিম।

মন্ত্রী দাবি করে বলেন, ‘গত কয়েক বছরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোন ঘটনা ঘটেনি। আমরা কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। আদালতের নির্দেশে তিনি কারাগারে আছেন। তার চিকিৎসায় যেন কোনো গাফিলতি না হয় তা আমরা দেখবো এবং দেখছি। তার  চিকিৎসায় কোনো অবহেলা হবে না। আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছর  হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে কমিউনিটি হাসপাতালের মাধ্যমে মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। এতে তিনি বলেন, ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ডাক্তাররা রোগীর সাথে খারাপ ব্যবহার করেন, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ওষুধ সেবন ও পরীক্ষা করাতে দেন। সব ডাক্তারের উচিত হবে সেবার মানসিকতা নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, সব চিকিৎসক বেশি টেস্ট দেন, বেশি ওষুধ লিখেন এমনটা সত্য নয়।

তবে যারা এগুলো করেন তাদেরকে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয় থেকে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের সচিব ফয়েজ আহমেদ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ।

সারাবাংলা/জিএস/আইএ

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর