ঢাকা: সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ করেন পরীক্ষার্থীরা। কিন্তু বারবার তা অস্বীকার করে আসছিল ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি ও বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেই বেরিয়ে আসে প্রশ্নফাঁসের সত্যতা। এরইমধ্যে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ১০ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে আটজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও দুইজন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। বুধবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) হারুন অর রশীদ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানায়, ঢাকা, সাভার ও উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও এলাকায় চক্রের সোর্স ছড়িয়ে রয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস হয় প্রথমে তেজগাঁওয়ের মাসুদের মাধ্যমে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। প্রতি প্রশ্নের দাম ১৫ লাখ টাকা।
ডিবি আরও জানিয়েছে, জামালপুরের স্বপন, জাহিদ, জনতা ব্য্যাংকের সিনিয়র অফিসার ইমদাদুল হক খোকন, পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোস্তসফিজুর রহমান মিলন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন শিহাব রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ইমদাদুল হক খোকন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র কিনে চাকরি পেয়েছিলেন। এরপর তিনি এই কাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। একবার প্রশ্নফাঁস করলে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেন তারা।
ডিবির আরেকটি সুত্র জানিয়েছে, আটক ১০ জনের মধ্যে আটজনই ব্যাংক কর্মকর্তা। আর দুইজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তারা চাকরি প্রার্থী। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হতে পারে।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, ব্যাংকের প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই চক্রের ১০ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রথম যে প্রশ্নপত্র কিনেছিল তাকেও আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৬ নভেম্বর) সমন্বিত পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ তোলেন। এমনকি ফাঁস হওয়া উত্তরপত্রসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে পরীক্ষা বাতিলে আন্দোলন শুরু করে। তারা লিখিত আবেদনও করেন বিভিন্ন দফতরে।