Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জলবায়ু প্রশ্নে ব্যর্থতায় বিশ্বনেতারা খাঁচায় বন্দি!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২১ ১৯:২৭

জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্বনেতাদের প্রতীকী কারাদণ্ড

ঢাকা: বাঁশের তৈরি খাঁচা, সেটিই জলবায়ু কারাগার। সেই কারাগারে বন্দি বিশ্বনেতারা। আর তাদের সামনেই দাঁড়িয়ে কিশোর-কিশোরী। তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে প্ল্যাকার্ড। সেসব প্ল্যাকার্ডের লেখাগুলো মিলে দাঁড়ায়— বিশ্বনেতাদের এখনই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বিশ্বনেতারা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট আন্তরিক নয়— এমন অভিযোগেই তাদের এই ‘কারাদণ্ড’!

বিজ্ঞাপন

না, সত্যি সত্যি কোনো বিশ্বনেতাকে জলবায়ু কারাগারে বন্দি করা হয়নি। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের যে নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী, তার বিরুদ্ধে সত্যি সত্যিই সোচ্চার হয়েছে কিশোর-কিশোরীরা। আর তারাই প্রতীকী অর্থে বিশ্বনেতাদের বন্দি করেছেন তাদের তৈরি প্রতীকী জলবায়ু কারাগারে।

বুধবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেখা গেল এই চিত্র। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায়ে ‘বিশ্বনেতাদের খাঁচায় বন্দি করো’ শীর্ষক এই কর্মসূচির আয়োজনে ছিল পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্টপ এমিশনস নাউ বাংলাদেশ’। ঢাকার কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।

জলবায়ু কারাগারে এভাবেই প্রতীকীভাবে বন্দি করা হয়েছে বিশ্বনেতাদের

কর্মসূচিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তারা বলেন, জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে গোটা বিশ্বেই প্রকৃতি অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। ধরিত্রী আজ সংকটাপন্ন। এই বিপর্যয়ের পেছনে দায়ী উন্নত বিশ্বের দেশগুলো। অথচ এর কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো দেশকে। জলবায়ু বিপর্যয়ে আজ বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি শিশু চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, যাদের প্রায় চার ভাগের এক ভাগের বয়স পাঁচ বছরেরও কম। অথচ কেবল সদিচ্ছা না থাকার কারণে উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারসহ কার্বন নিঃসরণ বন্ধে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না।

আইপিসির এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। এ কারণে এই শতকের মধ্যেই বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। আর সেটি ঘটলে প্রায় দুই কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বেন। একইসঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে খাদ্য উৎপাদনে, সংকট দেখা দেবে সুপেয় পানির।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বনেতারা যে কারাগারে ‘বন্দি’, তার চাবিটা কিন্তু শিশুদের হাতেই

এমিশনস নাও বাংলাদেশের সদস্য সচিব মঞ্জুরুল হাসান বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার জলবায়ু বিপর্যয়ের পেছনে অন্যতম ভূমিকা রাখছে। অথচ জি-২০ তথা উন্নত বিশ্বের দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। তারা এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। সে কারণেই বাংলাদেশসহ উপকূলীয় দেশগুলো ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে।

বিশ্বনেতাদের এই ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করেই অভিনব এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিশু-কিশোররা বলছে, বিশ্বনেতারা কথা রাখছেন না। তারা মুখে বললেও কার্যক্রমে প্রমাণ করে দিচ্ছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা নিয়ে তাদের কার্যকর কোনো ভাবনা নেই। তারা যদি এভাবেই চলতে থাকেন, কারাবরণই তাদের পরিণতি হওয়া উচিত।

শিশুদের দাবি একটাই— জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

প্রতীকী অর্থে তাই প্রেস ক্লাবের সামনে বিশ্বনেতাদের কারাবন্দি করেছে শিশু-কিশোররা। তারা বলছেন, জলবায়ু নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এভাবেই তাদের কারাগারে বন্দি করে রাখা হবে।

ছবি: হাবিবুর রহমান

সারাবাংলা/টিআর

জলবায়ু পরিবর্তন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব জীবাশ্ম জ্বালানি বিশ্বনেতারা কারাবন্দি স্টপ এমিশনস নাউ বাংলাদেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর