Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আকায়েদকে কেউ ভুল পথে নিয়েছে : আকায়েদের স্ত্রী


১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ২৩:১৩

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটানে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন যুবক আকায়েদ উল্লাহকে সেখানকার কেউ ভুল পথে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন আকায়েদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জুঁই। বাংলাদেশে থাকতে আাকায়েদ এরকম ছিল না। সারাক্ষণ বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে মেতে থাকত। তার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। সেই সময় থেকেই ওকে চিনি। ‍ সে খুব ভালো ছেলে ছিল। এমনকি বিয়ের পর কখনো আকায়েদ এরকমটা হয়েছে তা বুঝে উঠতে পারিনি। কিংবা সে নিজে থেকেও কাউকে এ ব্যাপারে উৎসাহিতও করেনি।

বুধবার বিকেলে হাজারীবাগের জিগাতলা মনেশ্বর রোডের ১০/১ আকায়েদের শ্বশুড় বাসায় গেলে স্ত্রী জুঁই সারাাবাংলাকে এসব কথা বলেন। জুই বিয়ের পর বাবা মায়ের সঙ্গে ওই বাসাতেই আছেন।

এ সময় আকায়েদের শ্বাশুড়ী মাহফুজা আক্তার বলেন, আমার জামাই অতটা খারাপ ছিল না যে, মানুষ মেরে ফেলবে। ঘটনার দিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টার দিকে মেয়েকে ফোন করে আকায়েদ। ওই সময় আমেরিকায় ভোর ৫টা বাজে। আকায়েদ বলেছিল নামাজ পড়ে কাজে বের হবে। এরপর আবার সন্ধ্যার দিকে জুই ফোন করলে বন্ধ পায় তার ফোন। তাকে না পেয়ে ওর ছোটভাইকে ফোন করে মূল ঘটনা জানতে পারে। এ ঘটনা শুনে আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি।

মাহফুজা আক্তার বলেন, পুলিশ আমাদের নিয়ে যায় তবে কোনো খারাপ ব্যবহার করেননি। তারা বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছে। আমরা যা জানি তা বলেছি। এরপরেও বাসার সামনে কেন সবসময় পুলিশ পাহারা রাখতে হবে তা বুঝতে পারছি না। কেন আমাদের নজড়দারিতে রাখা হয়েছে। এটা খুব বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে আমাদের।

বাসার নিরাপত্তারক্ষী মোজাফফর হোসেন বলেন, গত সেপ্টেম্বারে আকায়েদকে দেখেছেন তিনি। আকায়েদ থাকা অবস্থায় বন্ধু বান্ধবদের বাসায় আসতে দেখেছেন। তবে কোনো খারাপ কিছু চোখে পড়েনি তার। বেশিরভাগ সময় নামাজ ছাড়া বাসার মধ্যেই কাটিয়েছেন। এছাড়া ল্যাপটপ নিয়ে সময় কাটানোর কথাও বলেন তিনি।

আকায়েদের ব্যাপারে জানতে বুধবার দুপুরে ঢাকা সিটি কলেজে গেলে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহজাহান খান সারাবাংলাকে বলেন, ২০১১ সালে বিবিএ তৃতীয় বর্ষে পড়া অবস্থায় আমেরিকায় চলে যায়। এখানে থাকা অবস্থায় ‍ভালো ও মেধাবী ছিল। ওখানে গিয়ে এরকম পরিবর্তন আসতে পারে। তার স্ত্রী জুঁইও এ কলেজেরই ছাত্রী।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল জিগাতলার বাসা থেকে আকায়েদের স্ত্রী জুই, শ্বাশুড়ী মাহফুজা ও শ্বশুড় ‍জুলফিকার হায়দারকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেন। বুধবার আকায়েদের শ্যালক হাফিজ আহমেদ জয়কেও ডেকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।

এ ব্যাপারে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের অপরাধীর তালিকায় আকায়েদের নাম নেই। যেহেতু সে অপরাধ করেই ফেলেছে তাই তথ্য সংগ্রহ করতেই আকায়েদের পরিবারকে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। তার স্ত্রী জুঁই বলেছে, গত সেপ্টেম্বারে ঢাকায় আসার পর আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের অন্যতম জঙ্গি নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানির লিফলেট নিয়ে আলোচনা করেছিল। একটি লিফলেট তার স্ত্রীকে পড়তে দিয়েছিল। তবে কী কারণে কেন পড়তে বলেছিল তার কোনো ব্যাখ্যা করেনি আকায়েদ।

এক প্রশ্নের উত্তরে মনিরুল ইসলাম বলেন,নাফিজের ব্যাপারে এফবিআই আগে থেকেই তথ্য দিয়েছিল। তাছাড়া নাফিজের ব্যাপারে তথ্য ভান্ডারে তথ্য ছিল। তাই সে কানাডা থেকে বাংলাদেশে একবার এসেই পুলিশের জালে আটকে গিয়েছিল। আর আকায়েদের কোনো তথ্যও ছিল না, আবার আমেরিকা থেকেও আগে থেকে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর আমেরিকান পুলিশের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়েছে। এরপর উভয় দেশের প্রতিনিধিরা বসবেন। তারা যদি কোনো ধরণের সহায়তা চান আমরা করব। তারাও তদন্ত করছে, হয়ত এর মাধ্যমে সত্য বেরিয়ে আসবে। সেই অনুযায়ী তাদের আদালতে বিচার হবে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।

বাংলাদেশ পুলিশ নিজ উদ্যেগে কেন আকাযেদের ব্যাপারে তদন্ত করছে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, আমেরিকায় হাজার হাজার বাঙ্গালী রয়েছে। সেখানে অনেকে চাকরি ও ব্যবসা করেন। ওই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক স্বার্থ জড়িত। কাজেই সবকিছু মাথায় রেখে বিষয়টির সঠিক তদন্ত করা হচ্ছে।

আকায়েদ কিভাবে জঙ্গিবাদে নাম লেখালেন জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সব বিষয় বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, ইন্টারনেটের মাধ্যমে আকায়েদ উগ্রপন্থী হয়ে উঠতে পারে। আকায়েদের ঢাকা কানেকশন কতটা ছিল তা তদন্ত চলবে এবং পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত থাকবে।

তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে কিছু অনলাইন পত্রিকায় রাজনৈতিক পরিচয়ের কথা লিখেছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি।

সারাবাংলা/ইউজে/জেডএফ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর