Tuesday 01 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এএসপি আনিসুল হত্যা, প্রস্তুত চার্জশিট

আরিফুল ইসলাম,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২১ ১২:৪০ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২১ ১২:৪৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এএসপি আনিসুল করিম, ফাইল ছবি

ঢাকা: সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক বছর শেষ হলেও এখনো মামলাটির বিচারকাজ শুরু হয়নি। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চার্জশিট প্রস্তুত রয়েছে যে কোনো সময় দাখিল করা হবে।

বর্তমানে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যায়ে রয়েছে। সর্বশেষ ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দেন।

আলোচিত এই হত্যা মামলাটির ১৫ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসামিদের মধ্যে ছয় জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা আদাবর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ফারুক মোল্লা বলেন, এএসপি আনিসুল করিম শিপন হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। মামলার চার্জশিট প্রস্তুত করা রয়েছে। খুব দ্রুত আদালতে চার্জশিট দাখিল করবো।

মৃত আনিসুল করিম শিপনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তার ছেলে অসুস্থবোধ করায় তাকে চিকিৎসার জন্য মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। হাসপাতালের কর্মচারীরা তার ছেলেকে হত্যা করেছে। তার সর্বশেষ অবলম্বনটুকু কেড়ে নিয়েছে। তার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দিন আহম্মেদ।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন: মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, পরিচালক ফাতেমা খাতুন ময়না, মুহাম্মদ নিয়াজ মোর্শেদ, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মো. মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, ফার্মাসিস্ট মো. তানভীর হাসান, ওয়ার্ড বয় মো. তানিম মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, মো. লিটন আহাম্মদ, মো. সাইফুল ইসলাম পলাশ। এরা সকলেই কারাগারে রয়েছেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিনে রয়েছেন। সাখাওয়াত হোসেন ও সাজ্জাদ আমিন পলাতক।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। পরিবারের সবার মতামত অনুযায়ী ছেলেকে চিকিৎসা করানোর জন্য ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর প্রথমে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষ আনিসুল করিমকে ভর্তি করার সময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে আরিফ মাহমুদ জয় আনিসুলকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যায়। চিকিৎসার নামে দোতলার একটি অবজারভেশন রুমে (বিশেষভাবে তৈরি করা কক্ষ) নিয়ে যাওয়া হয়।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিরা চিকিৎসা করার অজুহাতে অবজারভেশন রুমে তাকে মারতে মারতে ঢুকায়। ভিকটিমকে ওই রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে শুইয়ে তিন-চারজন হাঁটু দিয়ে পিঠের ওপর চেপে বসে। কয়েকজন ভিকটিমের পিঠ মোড়া করে ওড়না দিয়ে দুই হাত বাঁধে। আসামিদের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমের ঘাড়ের পিছনে ও মাথায় আঘাত করে। আসামিরা সবাই মিলে পিঠ-ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মেরে আঘাত করে। এরপর বেলা ১২টার দিকে নিস্তেজ হয়ে পড়েন আনিসুল, যা হাসপাতালের সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দৃশ্যমান বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধাস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার।

ওই ঘটনায় নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দীন আহম্মেদ বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।

আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের একজন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশে সহকারী পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) হিসেবে কর্মরত ছিল।

সারাবাংলা/এআই/একেএম

এএসপি আনিসুল হত্যা চার্জশিট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর